জবিতে টেন্ডার নিয়ে প্রকৌশল দপ্তরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ধস্তাধস্তি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসের টেন্ডার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (১১ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিয়ে হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি বলেন, ‘কল দিয়ে কয়েকজন ছাত্র আমার সাথে আজ দেখা করতে চায়। আমি আমাদের টেন্ডরের মিটিং শেষ করে বেলা ১২টার দিকে রুমে আসলে তারাও ছাত্রলীগের সাত আটজন আমার রুমে প্রবেশ করে। এসময় তারা নিজেদেরকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদের নেতা বলে পরিচয় দেয়। এবং টেন্ডারের বিষয়ে কথা বলে।তারা বলে যে টেন্ডার হলে আমাদের দিকে একটু খেয়াল রাখিয়েন। আমি বলেছি এখনো অনেক কাজ বাকি এটা নিয়ে। কাগজপত্র যাচাই বাচাই করে তার পর জানা যাবে কাজ কে পেয়েছে। সুতরাং এটা নিয়ে এখনই কিছু করা বা জানানোর সময় হয়নি। এ সময় ছাত্রলীগের আরেকটি গ্রুপ সংখ্যায় এদের চেয়েও বেশি হবে, তারা বলে স্যার এক গ্রুপ নিয়ে মিটিং করলে হবে আমরাও তো আছি। তখনই নিজেদের মধ্যে টেন্ডার নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু করেলে এক র্পযায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে আমি তাদের বের হয়ে যেতে বলি। এ সময় তাদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডি এসে উভয় পক্ষকে শান্ত করে।

আজ কত টাকার টেন্ডার ছিল জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি বলেন প্রায় ৩০ কোটি টাকার ভলিয়ম ছিল এটি
বিশ্ববিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ক্যাম্পাসের ২০০ একর জমির বাউন্ডারি ওয়ালের ই-টেন্ডার জমা দেয়ার শেষ সময় ছিল আজ।

এ বিষয়কে কেন্দ্র করে আজ দুপুরে ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হোসনে মোবারক রিশাদ, নাজমুল ইসলাম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান, সাবেক দফতর সম্পাদক শাহবাজ হোসেন বর্ষণ ও সহ-সম্পাদক রিফাত সাঈদ, আনোয়র সাজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী দফতরে আসেন।

এর কিছু সময় পর ছাত্রলীগের আরেকটি গ্রুপ প্রকৌশলী দফতরে প্রবেশ করেন। তারা ছাত্রলীগের জবি শাখার সাবেক সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম টিটন ও জামাল উদ্দিনের কর্মী বলে পরিচিত। প্রধান প্রকৌশলীর দফতরে প্রবেশের পরপরই দুই গ্রুপের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। এক পর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও বাকবিতণ্ডা শুরু হলে প্রক্টরিয়াল বডি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

এ বিষয়ে সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হোসনে মোবারক রিশাদ বলেন, ‘করোনার জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই সকালের দিকে আমরা কয়েকজন মিলে ক্যাম্পাসে যাই। বিভিন্ন দফতরে আমাদের পরিচিতদের সাথে দেখা করি। বেলা ১২টার দিকে প্রধান প্রকৌশলীর কক্ষে ঢুকে কথা বলার সময় আশরাফুল, জামালের গ্রুপের কর্মীরা হুট করে রুমে আসে। এ সময় টেন্ডারের কথা বলে আমাদের সঙ্গে হট্টগোল শুরু করে।’

সাবেক দফতর সম্পাদক শাহবাজ হোসেন বর্ষণ বলেন, ‘আমরা প্রধান প্রকৌশলীর রুমে পরিচিত হওয়ার জন্য গেলাম। তার কিছুক্ষন পর কিছু জুনিয়র রুমে ডুকে উত্তেজিত কথা বলে। তখন আমরা তাদের কে শান্ত করার চেষ্টা করি। করা গেছেন তারা কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন সাবেক সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম টিটন ও জামাল উদ্দিন ভাইদের কর্মী।’

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি গত পরশুদিন ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীদের একটি অংশ ক্যম্পাসে মাস্ক বিতরন করেছে সিনিয়রদের না জানিয়ে। তারাই আজ আবার ক্যম্পাসে গেলে জুনিয়ররা তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয় এবং এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয় পরে প্রক্টর অফিসের লোকজন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ‘
জবির ২০০ একর জমির বাউন্ডারি ওয়ালের ই-টেন্ডার জমার কোন বিষয় আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার জানা নেই তবে থাকতেও পারে কারন করোনার মধ্রে তাহলে তারা কেন ক্যম্পাসে গেলেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ প্রধান প্রকৌশলীর কক্ষে হট্টগোল করছে জেনে আমরা দ্রুত সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। উভয়পক্ষকে বলেছি, শান্ত থাকতে। ক্যাম্পাসে কেউ এ নিয়ে ঝামেলা করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

এ বিষয়ে ছাত্ররীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন ‘ছাত্রলীগে কোনো টেন্ডারবাজের জায়গা নেই। যারা এ ধরনের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মোঃ সুমন/বার্তাবাজার/ভি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর