সবাইকে হত্যাকারী ২ ভাইয়ের কবরে পানি, একসাথে হয়নি সবার কবর

একসাথে কবর দেওয়া সম্ভব হয়নি যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের চার সদস্যকে হত্যাকারী দুই ভাই ও পরিবারের সবাইকে। পুর্ব পরিকল্পনা মতে মা, বাবা, বোন ও নারীর কবর খোড়ার পর ৫ম কবরটি খুঁড়তে গেলে সেখানে পানি ওঠা শুরু হয়। শত চেষ্টা করেও এই পানি সরানো সম্ভব হয়নি।

পরে বাধ্য হয়ে একটু দূরে শুকনো কবরের জায়গা পেয়ে সেখানেই কবর খোঁড়া হয় তানভির (২১) ও ফারহানের (১৯)।

গত ৮ এপ্রিল বিকালে টেক্সাস স্টেটের ডালাস সিটি সংলগ্ন এলেন সিটির অদূরে ডেন্টন মুসলিম গোরস্তানে এই কবর দেওয়ার সময় দুই সহস্রাধিক শোকার্ত মানুষ জড়ো হন। তাদের আহাজারিতে পুরো এলাকা থমকে যায়। শোকে স্তব্ধ কমিউনিটির সঙ্গে জানাজা এবং দাফনের সময় শত শত আমেরিকানও আসেন।

এলেন ইসলামিক সেন্টারে ৬ জনের জানাজা শেষে কফিনবাহী গাড়িকে স্কর্ট করে গোরস্তান পর্যন্ত নিয়ে যায় এলেন সিটির পুলিশ। কফিনের মিছিল অনুসরণ করে দুই হাজার মানুষের হাজারখানেক গাড়ি। দাফনের পর কবরে ফুলগাছ লাগানো হয়। অনেকে শেষ বিদায়ের সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশি আমেরিকান এই পরিবারের ৬ সদস্যের গুলিবিদ্ধ লাশের হদিস মেলে গত সোমবার ভোররাতে। এলেন সিটির ১৫১৭ পাইন ব্লাফ ড্রাইভের বাসায় তৌহিদুল ইসলাম (৫৪), তার স্ত্রী আইরিন ইসলাম (৫৬), কন্যা পারভিন তৌহিদ (১৯) শাশুড়ি আলফাতুন্নেসা, দুই পুত্র তানভির এবং ফারহানকে নিয়ে বাস করতেন।

এদেরই মরদেহ উদ্ধারের পর ফারহানের ইন্সট্রগ্রামে পোস্টিংয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা জানতে পারেন যে, মানসিক বিষন্নতায় আক্রান্ত ফারহানের পরামর্শে বড়ভাই তানভির সম্মত হন পরিবারের সবাইকে হত্যার পর নিজেরাও আত্মহত্যা করবেন।

এ ব্যাপারে ফারহান তার দীর্ঘ পোস্টিংয়ে উল্লেখ করেন, ‘আমি যদি আত্মহত্যা করি তাহলে পরিবারের সবাই সারাটি জীবন কষ্ট পাবেন। তাই সবাই যদি একসঙ্গে মরে যেতে পারি তাহলে দুঃখ পাবার কেউই থাকবে না।’

ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসক এবং পুলিশ জানান, দুই ভাই মা-বাবা-বোন-নানিকে দুই রাউন্ড করে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন। আর আত্মহত্যায় ব্যবহার করা হয় দুজনের জন্য দুই রাউন্ড বুলেট। মোট ১০টি বুলেটে ৬টি তাজা প্রাণ ঝরে গেছে।

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর