অসুস্থ মাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে অজানায় পাঠালো ছেলে

ষাটোর্ধ্ব ঝর্না বেগমের স্বামী নেই। চোখে দেখেন না। কোনো সন্তান না থাকায় মনা মিয়া নামের এক শিশুকে দত্তক এনেছিলেন। বড় করেন ছেলেকে। সেই মনা মিয়ার বয়স এখন ৩০। কিন্তু বুকে তোলে নেওয়া মাকে দেখভালে তার কোনো নজর নেই। অবশেষে মাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে অজানায় পাঠিয়ে দিয়ে চাচ্ছিলেন মুক্তি।

করোনায় ভয়ে ঝর্না বেগমকে শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেনে তুলে দেন মনা মিয়া। সাথে দেন কিছু পুরাতন কাপড় আর কাঁথা। ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশনে বিরতি দিলে যাত্রীদের কাছে কান্নাকাটি করে নামিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন ঝর্না বেগম। তখন নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন তাকে নামিয়ে দেন। ৩ দিন ধরে এই স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে পড়ে আছেন তিনি।

বুধবার (৭ এপ্রিল) আখাউড়া রেলস্টেশনে বৃদ্ধা ঝর্না বেগমকে একা বসে বসে কাঁদতে দেখা গেছে। পরিচয় জানতে চাইলে কান্নাকাটি করেন হাউ মাউ করে।

তিনি জানান, শায়েস্তাগঞ্জের বনগাঁও বাবার বাড়ি। স্বামী নূর মোহাম্মদ সফিক দুই যুগ আগেই কোনো এক দুর্ঘটনায় মারা যান। ছোট্ট একটা ছেলেকে দত্তক নিয়ে বড় করেন। সেই মনা মিয়ার এখন যৌবনকাল। তিন দিন আগে অসুস্থ মাকে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে বস্তায় কিছু পুরাতন কাপড় আর কাঁথা দিয়ে ট্রেনে তুলে দেয় তার পালক ছেলে মনা মিয়া।

এ বিষয়ে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট কামরুল হাসান তালুকদার বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। মাকে এভাবে ফেলে যাওয়ার মতো জঘন্য কাজ কোনো ছেলে করতে পারে জানা ছিল না। তবে ওই বৃদ্ধার চিকিৎসার প্রয়োজন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির ব্যবস্থা করব

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর