বাসর রাতেই এক নারীর বিভীষিকাময় মিলনের অভিজ্ঞতা

চাদরটা সাদা হতেই পারে, প্রথাটা কিন্তু নিকষ কালো! আর তাই ভারতের মহারাস্ট্রের নারীদের জন্য তাদের বিয়ের দিনের রাতটি হয়ে পড়ে বিভীষিকাময়। আর নিজের এমনই এক অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করলেন ছদ্মনামধারী এক তরুণী এলমিরা।
তিনি জানান, বিয়ের পর আমার স্বামী যখন পোষাক খুলতে শুরু করেন তখন আমি ভয়ে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমি বার বার নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম যে এখন আমার বিয়ে হয়ে গেছে। তাই আমার সঙ্গে এগুলো হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছুতেই নিজেকে বুঝাতে পারছিলাম।

এলমিরার তখন বয়স ছিল ২৭ বছর। মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে দোভাষী হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। আর তার স্বামীকে বেছে নিয়েছিলেন তার বাবা-মা। এলমিরা সেই বিয়েতে সম্মতিও জানিয়েছিলেন। শুধুমাত্র তার মাকে খুশি করতে। এলমিরা বলেন, ওই লোকটি ছিল আমাদের প্রতিবেশী, আমরা একেবারে আলাদা মানুষ ছিলাম সে শিক্ষিত ছিল না, আমাদের মধ্যে কোন কিছুতেই কোন মিল ছিল না।

আমার ভাই, আমাকে তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল এবং তারা আমাকে বলেছিল সে একজন ভাল লোক। প্রতিবেশীকে বিয়ে করছি দেখে, মা খুব খুশি ছিলেন। কারণ আমি তার কাছাকাছি থাকতে পারবো, সে আমার খোঁজ খবর নিতে পারবে। বাড়িতে বিয়ের প্রসঙ্গ উঠতেই এলমিরা তার মাকে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে তিনি এখনই বিয়ে করতে চাননা। এলমিরার মা এই বিষয়টি আত্মীয় স্বজনদের জানিয়ে দিলে তারা এলমিরাকে চাপ দিতে থাকেন। অনেকেই সন্দেহ করছিলেন যে এলমিরা হয়তো কুমারী নন।

কিন্তু সত্যিটা বিয়েতে ভয় ছিলো এলমিরার। বিয়ের প্রথম রাতেই প্রথমবার যৌনমিলন করেছিলেন তার স্বামী। আর সেটিও তার অসম্মতিক্রমে। তার স্বামী এলমিরার অনুভূতি এবং আত্ম-সম্মানবোধকে বিন্দুমাত্র পরোয়া করেন না।

এলমিরার কথায়, তিনি শুধু আমার উপর হামলে পড়েন, যখন আমার মাথা আলমারির সঙ্গে ধাক্কা লাগতে থাকে, তখনই শুনি দরজায় টোকা পড়ছে আর পাশের ঘর থেকে নারী কণ্ঠ ভেসে আসছে, আস্তে, চুপচাপ থাকো। আমি একইসঙ্গে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলাম আবার বিব্রত বোধ করছিলাম। ভাবছিলাম, বিয়ে মানে কি এগুলোই? বিষয়টা কি জঘন্য!

আসলে দরজার পিছনে ছিলেন এলমিরার মা, দুই ফুফু/খালা, তার শাশুড়ি, এবং আরেকজন দূরবর্তী আত্মীয় (যিনি দরজায় টোকা দিয়ে চেঁচিয়েছিলেন)।

স্থানীয় প্রথা অনুযায়ী বিয়ের রাতে বর কনের ঘরের বাইরে দুই পরিবারের সদস্যদের বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকতে হয়। আর এ কারণ হলো নববধূর কুমারীত্ব প্রমাণ করা। এছাড়া বাসর ঘরের বিছানার চাদর থাকতে হবে সাদা। আর সেখানে রক্ত থাকলেই বুঝতে হবে নববধূ কুমারী। এরপরে তাদের বরের পরিবার থেকে বধূর সম্মাননা দেয়া শুরু হয়।

তবে বেশ কয়েকদিন আগেই বিষয়টি নিয়ে টনক নড়ে উঠে মহারাষ্ট্র সরকারের। তারা জানায়, কোনো মহিলা কুমারী কিনা জানতে চাওয়া এবং তার জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা তাকে যৌন হেনস্থা করার সামিল। আর এখন থেকে রাজ্য বিষয়টিকে অপরাধ বলেই ধরা হবে। হবু স্ত্রীয়ের পাশাপাশি সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীয়ের ক্ষেত্রে এই নতুন নিয়ম একইভাবে কার্যকর হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর