ধর্ষণ শেষে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো, ছাত্রলীগ সভাপতি ও পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ইয়াবা দিয়ে অসহায় নারীকে ফাঁসানোর অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, হাটহাজারী মডেল থানার ৩ জন উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই), ৩ জন কনস্টেবল ও ৩ জন সোর্সের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল রোববার (৭ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে তাছমিনা আক্তার (৩১) নামের এক ভুক্তভোগী নারী এ মামলা দায়ের করেন। তাছমিনা আক্তার হাটহাজারী উপজেলার পূর্ব মেখল, মিয়াজান তালুকদার বাড়ির মো. শফির কন্যা।

আসামিরা হলেন- হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আরিফুর রহমান রাসেল (৩২), হাটহাজারী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মুকিব হাসান, এসআই মো. সেলিম মিয়া, এসআই কফিল উদ্দীন, কনস্টেবল মো. পারভেজ, কনস্টেবল মো. সাইফুল, কনস্টেবল বৈশাখী রহমান, পুলিশের সোর্স মো. রিংকু সুলতান (২৫), মো. হেলাল উদ্দীন ও মো. হেলাল (৩৫)।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত ২৮শে জানুয়ারি ভুক্তভোগী নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২-এ হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৯ (১) ধারায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি আদালত সরাসরি এফআইআর হিসেবে নেয়ার জন্য হাটহাজারী থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন। পরে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী থানা অভিযোগটি মামলা আকারে গ্রহণ করেন। ভুক্তভোগীকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রাসেল হাটহাজারী গেস্ট হাউস নামক স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশ সদস্যরা তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। সেই মামলায় ৫ মাস কারাগারে ছিলেন ওই নারী।

মামলার বাদীনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামীর সঙ্গে বিরোধ, পারিবারিক অশান্তি ও সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ না পেয়ে প্রতিকারের আশায় ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রাসেল এর শরণাপন্ন হলে সে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়ে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে উপজেলা সদরের গেস্ট হাউসে নিয়ে ধর্ষণের পর পুলিশের মাধ্যমে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। সেই মামলায় পাঁচ মাস আমি কারাগারে ছিলাম। এ ঘটনায় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে আজ আমি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করি।

বাদীনির আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ ইলিয়াস সাংবাদিকদের জানান, ভুক্তভোগী নারীকে ছাত্রলীগের নেতা রাসেল হাটহাজারী গেস্ট হাউস নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশ সদস্যরা তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। সেই মামলায় ৫ মাস কারাগারে ছিলেন ওই নারী। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৩ ও ১৫ ধারায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য রেখেছেন।

হাটহাজারী সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোর্টে মামলা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কাগজপত্র থানায় এসে পৌঁছায়নি। মানবজমিন

বার্তাবাজার/ভি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর