সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করুন: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান এমপি বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করতে হবে। তাহলে ২০৪১ সালের আগেই আমরা উন্নত জাতি হিসেবে সারা বিশ্বে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী রোববার (৭ই মার্চ) দুপুরে নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, রাঙ্গামাটি অডিটোরিয়া রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ আয়োজিত ধর্মীয় ও সচেতনতামূলক আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক ভাষনের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালীকে ঐক্যবদ্ধ করে পেরেছিলেন বলেই আমরা অসাধ্যকে সাধন করে জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অ অর্জন করতে পেরেছিলাম। জাতির পিতার কন্যার নেতৃত্বে আমাদের সবাইকে আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হবে। সেজন্য প্রয়োজন ধর্ম-বর্ণ নির্বেশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ধর্মের নামে কোন অশুভ শক্তি যেন আমাদের সমাজকে অস্থিতিশীল না করতে পারে সে বিষয়ে প্রতিটি ধর্মের সকল ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করায় বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা দূরন্ত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের সকল সূচকে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছে। যার ফলশ্রুতিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায় থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক প্রকল্প সরকারের একটি অন্যতম উদ্যোগ।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট নিজ নিজ সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও কল্যাণে বহুকমূখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গীর্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, উন্নয়ন, মেরামতও সংস্কারে বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। যার সুফল সকল সম্প্রদায়ের জনগণ ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্প সমূহের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে প্রাক-প্রাথমিক ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান করে ধর্মীয় ও নৈতিকতাসম্পন্ন যোগ্য নাগিরিক হিসেবে গড়ে তুলতে তথা উন্নত জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয়, সামাজিক ও মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে করে যাচ্ছে।

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অং স্য প্রু চৌধুরী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এডভোকেট দীপংকর তালুকদার এমপি, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি রাঙ্গামাটি জেলার পুলিশ সুপার মোদাচ্ছর হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রমূখ।

সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিনিধিবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিবৃন্দ, সাংবাদিকগণ বক্তব্য রাখেন।

এর পূর্বে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গামাটির পার্বত্য জেলা উন্নয়ন বোর্ড মিলনায়তনে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় রাঙ্গামাটি জেলায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন বিতরণ করেন।

বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর