যুক্তরাষ্ট্রেও ব্যঙ্গাত্মক লেখা হয়, কিন্তু আমাদের দেশের মতো অশ্লীল না: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, আমেরিকাতেও স্যাটায়ার (ব্যঙ্গাত্মক রচনা) লেখা হয়। কিন্তু আমাদের দেশের মতো এত নগ্নভাবে করা হয় না। আমাদের এখানে যেসব ভাষা ব্যবহার করা হয়, তা কীভাবে একজন শিক্ষিত লোক লিখে থাকেন? তাহলে শিক্ষার মর্যাদা কোথায় রইল! বেশ কয়েকটি মামলায় এ ধরনের ভাষা আমরা ব্যবহার করতে দেখেছি। মনে রাখতে হবে, দেশের ইমেজ সবার আগে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ লেখার কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এক মামলার আসামি সিলেটের গোলাম সারোয়ারের জামিন আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানিকালে এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। আদালত ওই আসামির জামিন বহাল রেখে আদেশ দেন। ভবিষ্যতে আর যাতে এ ধরনের মন্তব্য না করেন সেজন্য আইনজীবীর মাধ্যমে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. আসাদুজ্জামান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, আসামি এক বছর ধরে কারাগারে আছেন। এখনো অভিযোগপত্র হয়নি। হার্টে চারটি স্ট্রেন্টিং রয়েছে। অসুস্থ মানুষ বিনাবিচারে কারাগারে রয়েছে। এ কারণে জামিন বহাল রাখা প্রয়োজন। জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চাচ্ছি।

এ সময় আদালত বলেন, হার্টে চারটি স্ট্রেন্টিং নিয়ে এসব কুরুচিপূর্ণ লেখা লিখে বেড়ান?

রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ বলেন, মাই লর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে দেওয়া পোস্টে যেসব ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো আমি প্রকাশ্য আদালতে পাঠ করে শোনাতে চাচ্ছি না। আপনারা দয়া করে একটু এজাহারটা দেখুন।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, স্যাটায়ার করুন, কিন্তু সেটার ভাষা পরিশীলিত হতে হবে। যেসব ভাষা ব্যবহার করেছে তাতে শিক্ষিত লোকের সঙ্গে যায় না। তিনি আসামির আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, আপনার আসামিকে সতর্ক করে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে আর এরকম করলে জামিন হবে না।

প্রসঙ্গত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্পর্কে কটুক্তি করে বিভিন্ন নেতিবাচক পোস্ট, ছবি বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার অভিযোগে গতবছর ১৪ মার্চ গোলাম সারোয়ারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৫ মার্চ সিলেটের শহাপরান থানায় গোলাম সারোয়ারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। এ মামলায় গতবছর ১১ অক্টোবর হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। এ জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করলে গতবছর ১৮ অক্টোবর হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করে দেওয়া হয়। এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পাশাপাশি আসামির জামিন বহাল রাখার আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। এ আবেদনের ওপর শুনানি হয়। আপিল বিভাগ চেম্বার বিচারপতির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে জামিন বহাল রাখেন।

বার্তাবাজার/ই.এইচ.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর