নান্দাইলে গুজবে প্রতারিত হচ্ছে অর্ধ লক্ষাধীক শিক্ষার্থী

করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে রোববার এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে নান্দাইল উপজেলার প্রায় অর্ধ লক্ষাধীক স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী তাদের অভিভাবকদের নিয়ে ভিড় জমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অনলাইন সার্ভিসের দোকানগুলোতে।

জানা যায়, কোভিড ১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে মর্মে একটি খবর মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রত্যয়ণপত্র যোগাড় করার জন্য বিদ্যালয়গুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।

শিক্ষামন্ত্রণালয়ে ওয়েব সাইটে আবেদ করার জন্য শিক্ষার্থীরা শহরের অনলাইন সার্ভিসগুলেতে ভিড় জমায়। রবিবার দুপুর ১টার দিকে নান্দাইল পৌর সদরে ঘুরে দেখা গেছে অন্ততপক্ষে ২০ হাজার শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করতে নিজ প্রতিষ্ঠানে ও বিভিন্ন দোকানে ভিড় করছে।

এসময় শিক্ষার্থীরা জানান, করোনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে শুনে তারা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে প্রত্যায়ন নিয়ে অনলাইন আবেদন করছেন। প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যায়ন নিয়ে আবেদন করতে তাদের ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে খরচ হচ্ছে।

সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল আউয়াল বার্তা বাজারকে বলেন, ১০ হাজার টাকা অনুদানের বিষয়টা নিয়ে আমার কাছে প্রথমে সন্দেহ হচ্ছিল কিন্তু পরে দেখলাম সবাই আবেদন করছে। তাই আমিও আবেদন করতে এসেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ফেসবুক থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে কোভিড ১৯ প্রণোদনা প্রদানের খবরকে একটি মহলের গুজব বলে দাবি করা হয়।

সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাদল কুমার দত্ত বার্তা বাজারকে জানান, সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আবেদন নিতে কোন চিঠি তাঁর কাছে আসেনি। একটি মহল গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করছে। যারা প্রত্যয়নপত্র নিতে আসছে, আমরা তাদের প্রত্যয়নপত্র দিচ্ছি।

নান্দাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক বার্তা বাজারকে বলেন, অভিভাবকদের চাপের মুখে তাঁর প্রতিষ্ঠানের ছয়শর মতো ছাত্রীকে প্রত্যয়ণপত্র দিতে হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা ব্যাখ্যা করেও কাউকে বিরত রাখা যায়নি।

চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রত্যয়ণপত্রের বই ফুরিয়ে যাওয়ায় ছাত্ররা ফটোকপি করে প্রত্যয়ণপত্র যোগাড় করতে দেখা গেছে।

মুঠোফোনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. ফজলুর রহমান বার্তা বাজারকে জানান, প্রতি বছর দুস্থ, প্রতিবন্ধী, রোগগ্রস্থ, গরীব মেধাবি, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের সরকার অনুদান দিয়ে থাকে। তবে এসব অনুদান সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। একটি মহল জেনেশুনে অপপ্রচার চালিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করছে।

মজিবুর রহমান ফয়সাল/বার্তাবাজার/হৃ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর