স্বামীর মৃত্যুর ১০ বছর পর স্ত্রীর সন্তান প্রসব

যশোরে স্বামীর মৃত্যুর ১০ বছর পর পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক গৃহপরিচারিকা।

গর্ভধারিণী ওই নারীর পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের দাবি, তিনি এক বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে গৃহকর্তার লালসার শিকার হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া গ্রামে। বর্তমান ওই নারী ও নবজাতকসহ যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

গর্ভধারিণী নারী ও তার পরিবারের লোকেরা বার্তাবাজারে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি এক ছেলেকে নিয়ে কেশবপুরের পাঁজিয়া গ্রামে বসবাস করতেন। জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি একই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আফসারের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছিলেন।

ওই চিকিৎসকের ভাই মৃত হুকুম আলীর ছেলে ইয়াকুব আলী দীর্ঘদিন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে এককথায় ধর্ষণ করে। ছয় মাস আগে জানতে পারেন ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা। ইয়াকুব আলীর সন্তান তার গর্ভে। এরপর থেকে তিনি কাজ ছেড়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে থাকতেন। চলতি মাসের গত ৩ মার্চ তার প্রসব বেদনা শুরু হলে ইয়াকুব আলী পক্ষের লোকজন তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে কেশবপুর সাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসক। সেখানেই তিনি একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন।

একটি সুত্র বার্তা বাজার প্রতিবেদককে জানায়, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই নারীকে কেশবপুর সাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তড়িঘড়ি করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির সময়ও নেয়া হয়েছে প্রতারণার আশ্রয়। ওই নারীর স্বামীর পরিচয় গোপন করে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। তার ভর্তি রেজিষ্ট্রেশন নং-৯৫৬৬/১২৫। ভর্তির টিকিটে ওই নারীর মৃত স্বামীকে পিতা হিসেবে দেখানো হয়েছে।

গ্রামে সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত ইয়াকুব আলীর সংসারে স্ত্রী ও দু’সন্তান রয়েছে। তারপরও ওই গৃহপরিচারিকাকে(কাজের লোক) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে আসছিল। একাধিক বার ওই নারী ও ইয়াকুব আলী শারীরিক সম্পর্কের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। সর্বশেষ, ছয় মাস আগে পারিবারিক ভাবে টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি মীমাংসাও হয়। এরপর থেকে ওই গৃহপরিচারিকা নিজ বাড়িতেই থাকতেন। ওই নারীর প্রসব বেদনা উঠলে প্রতিবেশীরা অবাক হন এবং এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের চাপের মুখে ঔ নারী শিকার করেন তার গর্ভের ইয়াকুব আলীর সন্তান।

বার্তা বাজার প্রতিবেদক সরজমিনে গিয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্রে পিতা/স্বামীর নামের স্থানে মৃত স্বামীর নাম লেখার কারণ জানতে চাইলে ওই নারী জানান, তিনি মূর্খ। লেখাপড়া জানেন না। হাসপাতালে যারা ভর্তি করেছেন তারাই ওই নাম লিখিয়েছেন। অভিযুক্ত ইয়াকুব আলীকে এক বছর আগে তার অন্তঃসত্ত্বার কথা জানালে তাকে বিয়ে করেন। তবে, এখনো পর্যন্ত কোনো কাবিননামা তিনি দেখেননি। তার ও সন্তানের চিকিৎসা খরচ সব ইয়াকুব আলী বহন করছেন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরলে তাকে ও তার পুত্র সন্তানকে ইয়াকুব আলীর পরিবার মেনে নেবে বলে জানান ওই নারী।

এ্যান্টনি দাস(অপু)/বার্তাবাজার/পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর