টাঙ্গাইলে মাশরুম চাষ করে স্বপ্ন বুনছেন প্রবাসী সাইফুল

মাশরুম চাষ করে স্বপ্ন বুনছেন টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার রাশড়া গ্রামের প্রবাসী সাইফুল ইসলাম (৩০)। প্রবাসী সাইফুল ইসলাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাশড়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাইফুল ইসলাম তার নিজ বাড়িতে শুরু করেছেন মাশরুমের খামার। তিনি তার মাশরুম খামারের নাম দিয়েছেন সিনথিয়া মাশরুম খামার। স্থানীয় এলাকার করিম বাজারে দিয়েছেন সিনথিয়া মাশরুম ফাস্ট ফুডের দোকান।

প্রবাসী সাইফুল ইসলাম বার্তা বাজারকে বলেন, আমি দেশের বাহিরে ছিলাম। করোনার আগে সৌদি আরব থেকে আমি ছুটিতে বাড়িতে আসি। সারা বিশ্বে যখন মহামারি করোনা শুরু হয় তখন দেশ-বিদেশে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আমি পড়ে যায় লকডাউনের মধ্যে। পরে আমার বিদেশ যাওয়ার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তখন আর আমি বিদেশে যেতে পারি নাই। তখন মনে মনে অনেক চিন্তা ভাবনা শুরু করি দেশে কিছু একটা করবো।

তিনি বার্তা বাজারকে আরও বলেন, আমি ইউটিউবে মাশরুম চাষের ভিডিও দেখি। স্বপ্ন দেখতে শুরু করি মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ কিভাবে নিতে পারবো। বাসাইল কৃষি অফিসের উপ-সহকারী রাশড়া ব্লকের আব্দুল মোতালবের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করি। তিনি সাভার জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের নাম্বার ব্যবস্থা করে দেন। তারপরে আমি সাভার জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ইন্সটিটিউটে মাশরুম চাষের উপর প্রশিক্ষণ নেয়। মহামারি করোনার সময় বাড়িতে থেকেই মোবাইলে অনলাইন প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুম আইডির মাধ্যমে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ শেষ করি।

সাইফুল বার্তা বাজারকে জানান, সাভারে গিয়ে ৭ দিনের অভিজ্ঞতা অর্জন করি। সাভার থেকে বীজ নিয়ে এসে বাড়িতে মাশরুম চাষ শুরু করি। তিন মাস পর থেকে মাশরুম আসা শুরু করে। তার পর থেকে প্রতিদিন ৪-৫ কেজি মাশরুম পাচ্ছি। আমার মাশরুম খামারে ৪৫০টি স্পন বীজ প্যাকেট রয়েছে। প্রতিটি প্যাকেট থেকে ২০০-২৫০ গ্রাম মাশরুম পাচ্ছি। প্রতিটি প্যাকেটে খরচ হয়েছে ১৫-২০ টাকা। এবং খড়ের প্যাকেট ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ৫৫০টি। প্রতিটি খড়ের প্যাকেট করতে খরচ হয়েছে ৫০-৬০ টাকা।

আমার লক্ষ্য দুই হাজার বীজের প্যাকেট করবো। এছাড়াও কেউ যদি মাশরুমের প্যাকেট বীজ নিতে চায় তাদেরকে আমি দিব।

বাসাইল উপজেলার কৃষি উপ-সহকারী রাশড়া ব্লকের আব্দুল মোতালেব বার্তা বাজারকে জানান, প্রবাসী সাইফুল ইসলাম আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি সাভার জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের কথা বলি। সাভার থেকে মাশরুমের প্রশিক্ষণ নেন। তার খামারে এখন ৪৫০টি স্পন বীজ প্যাকেট রয়েছে। মাশরুম খামার করে সে প্রতিদিন ৪-৫ কেজি মাশরুম পাচ্ছে। তাকে বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। যাতে করে তরুণরা তাকে দেখে মাশরুম চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠে।

বাসাইল উপজেলার কৃষি অফিসার নাজনীন আক্তার বার্তা বাজারকে বলেন, আমি তার মাশরুম খামার দেখতে গিয়েছিলাম। কৃষি অফিস থেকে তাকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। যাতে করে মাশরুম চাষ করে সে লাভবান হতে পারে।

তিনি বার্তা বাজারকে আরও জানান, অল্প খরচে মাশরুম চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। কম খরচে মাশরুম চাষ করা যায়। মাশরুম চাষ করতে লাখ লাখ টাকার প্রয়োজন হয় না। তাই বেকার বসে না থেকে এখনই মাশরুম চাষে আগ্রহী হওয়া। মাশরুম চাষের উপর প্রশিক্ষণ নেওয়া।

হাসান সিকদার/বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর