রাণীশংকৈলের কৃষকদের আলু যাচ্ছে বিদেশে

আলু বিশ্বের অন্যতম প্রধান ফসল। উৎপাদনের দিক থেকে ধান, গম ও ভুট্টার পরেই চতুর্থ স্থানে আছে আলু। বাংলাদেশে আলু একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। বাংলাদেশের সর্বত্রই এর চাষ হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে জেলার রাণীশংকৈলে অনুকূল আবহাওয়া হওয়ায় বাম্পার ফলনের কথা জানিয়েছে কৃষি দপ্তর।

আলু এলাকার চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানির ফলে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এ এলাকার আলু চাষিরা। এ মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কৃষকের উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের ৫০০টনের অধিক আলু যাচ্ছে মালয়েশিয়া, নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৮৬০ হেক্টর। কিন্তু অর্জন হয়েছে ৩৯৫০ হেক্টর। এবার এক আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এ উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে মাঝারি ধরনের ‘ডায়ামন্ট, গ্রানোলা,এসটোরিক’ জাতের আলু ১০ টাকা কেজি দরে কিনে বিদেশে রপ্তানি করছে। এর ফলে চাষি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।

ধর্মগড় এলাকার সুলতান নামের এক আলু চাষী বার্তা বাজারকে জানান, তিনি এবার ১ একর জমিতে উন্নত জাতের আলু চাষ করেন। কৃষি অফিসের যথার্থ পরামর্শে ভালো ফলন পেয়েছি এবং আর্থিকভাবে ভালোই লাভবান হয়েছি। ভালো লাগছে আমাদের এলাকার আলু বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।

ওলিয়র রহমান নামের আরেক আলু চাষী বার্তা বাজারকে বলেন, আমি ২ একর এর উপরে আলু লাগিয়েছি। কৃষি অফিসের পরামর্শে উন্নত জাতের আলু চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় ভালো ফলনও হয়েছে। এবার বাজারে আলুর আমদানি বেশি থাকায় দাম একটু কম পাওয়া গেছে। তবে অর্ধেক জমিতে থাকা আলু এক প্রতিষ্ঠানের (আমদানি-রপ্তানিকারক) এক লোক এসে ১০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করেছে। আর বলছে বিদেশে পাঠানো হবে। এর ফলে একটু লাভের মুখ দেখব বলে আশা করছি।

ভালো জাতের আলুর চাষ করলে একদিকে চাষি আর্থিকভাবে লাভবান যেমন হয় অন্যদিকে ফলনও আশানুরূপ পাওয়া যায়। আলু এখন আমাদের দেশে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় একটি ফসল। প্রক্রিয়াজাত আলু বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। স্বল্পমেয়াদি এ ফসলটির উৎপাদন আয় অন্যান্য ফসলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ বার্তা বাজারকে বলেন, যেকোন ফসলে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রযুক্তি প্রদান করে সহযোগিতা করা হচ্ছে। কৃষকরা যেন সবসময় সব ফসলে ভালো ফলাফল পায় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। এবার এ এলাকার আলু চাষিদের আলু বিদেশে রপ্তানির ফলে কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। আগামীতে ফুলকপি, মুলা, টমেটোসহ আরো কৃষি পণ্য বিদেশে রপ্তানি হবে বলে আশা করছি।

মো: সবুজ ইসলাম/বার্তাবাজার/হৃ.আর