বাগেরহাটে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেয়ে খুশি ৮০ বছরের বৃদ্ধ

বাগেরহাটে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেলেন রাস্তার পাশে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে খুপরি ঘরে বসবাস করা মুক্তিযোদ্ধা দাবি করা রতন কুমার বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলা প্রশাসন থেকে সদর উপজেলা ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের রণভুমি আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় তার জন্য এ ঘর বরাদ্ধ করা হয়।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান প্রকল্পের আওতায় এ ঘর পেয়ে অনেক খুশি রতন কুমার বিশ্বাস (৮০) ও তার স্ত্রী মনিরা বেগম (৬৫)।

এছাড়া রতন কুমার বিশ্বাসকে নতুন ঘরের জন্য সদর উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি খাট, তোষক, বিছানা, বালিস, চুলা, হাড়ি-পাতিলসহ সুপেয় পানির জন্য একটি টিউবয়েল ও বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রতন কুমার বিশ্বাসকে ঘর হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যন সরদার নাসির উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোছাব্বেরুল ইসলাম, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের একান্ত সচিব এইচএম শাহিন, ষাটগম্বুজ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, বাগেরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারুক তালুকদার প্রমুখ।

বৃদ্ধ রতন কুমার বিশ্বাস বার্তা বাজারকে বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু স্বীকৃতি পাইনি। আবেদন করেছি মন্ত্রণালয়ে কি হবে জানিনা। বাবার যত সম্পদ ছিল মানুষে জোর পূর্বক জাল দলিল করে দখল করে নিয়েছেন। এখন আমার দখলে কোন জমি নেই। দশ বছরের বেশি সময় মেগনিতলা রাস্তার পাশে একটি ঝুপড়ির মধ্যে থাকতাম। বিভিন্ন সময় অনেকেই অনেক কিছু দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কিছুই পাইনি।

আজকে প্রধানমন্ত্রীর দয়ায় একটি পাকা ঘর পেয়েছি। বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ যাদের চেষ্টায় আমাদের এই ঘর প্রদান করা হল তাদের ধন্যবাদ জানাই। মরার আগ পর্যন্ত পাকা ঘরে থাকতে পারব এই ভেবেই খুব আনন্দ লাগছে মনে। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে মারতে চাই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই বৃদ্ধ।

রতন কুমারের সহধর্মিনী অসুস্থ্য মনিরা বেগম বার্তা বাজারকে বলেন, পৃথিবীতে কেউ নেই আমার। ১৫ বছর আগে তার (রতন কুমার বিশ্বাস) সাথে থাকা শুরু করি। কিছুদিন বেড়িবাঁধে থেকেছি। পরে দশ বছর ধরে খেয়ে না খেয়ে মেগনিতলার ঝুপড়িতে আছি। আজ পাকা ঘর পেলাম। জীবনে পাকা ঘরে থাকব তা কখনও ভাবতে পারিনি। আমরা খুব খুশি হয়েছি।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বার্তা বাজারকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জানতে পারি মুক্তিযোদ্ধা দাবি করা রতন কুমার বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি তার সহধর্মিনীকে নিয়ে সড়কের পাশে ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমি তার খোঁজ খবর নেই। তাকে রনসেন গুচ্ছ গ্রামে জমিসহ একটি ঘর দেওয়ার প্রস্তাব দেই। তিনি রাজি হন। সেই প্রক্রিয়া হিসেবে পাকা ঘর, খাট, পোশাক, হাড়ি-পাতিল, খাবারসহ তার জন্য নির্ধারিত ঘরে উঠিয়ে দিয়েছি।

বয়স বেশি হওয়ায় শারীরিকভাবেও একটু অসুস্থ্য তারা দুজন। এজন্য সহজে পানির সংস্থানের জন্য তাদের ঘরের পাশে একটি ডিবটিউবওয়েল ও বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আশা করি বাকি দিনগুলো এই দম্পতি শান্তিতে থাকতে পারবেন।

সৈয়দ ওবায়দুল হোসেন/বার্তাবাজার/হৃ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর