এইচ টি ইমামের সংক্ষিপ্ত জীবনী

হোসেন তৌফিক ইমাম যিনি সচরাচর এইচ. টি. ইমাম নামে পরিচিত একজন রাজনীতিবিদ। তিনি তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের উচ্চ পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা হয়েও ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ক্যাবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদায় জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা নিয়োগ করেন। ২০১৪ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়। তিনি একজন সুবক্তা ও সুলেখক। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা পরিচালনা বিষয়ে তার মূল্যবান কয়েকটি গ্রন্থ রয়েছে।

১৯৩৯ সালের ১৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরে জন্মগ্রহণ করেন এইচ টি ইমাম। পিতা নাম তাফসির উদ্দীন আহমেদ ও মাতা তাহসিন খাতুন। পিতার চাকুরির সূত্রে শৈশবে রাজশাহীতে থাকায় সেখানেই প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে লেখাপড়া করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া ও কলকাতায়।

১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক পাস করেছেন ঢাকা কলেজিয়েট হাইস্কুল থেকে। এরপর ভর্তি হন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে। এখান থেকেই ১৯৫৪ তে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এর পর ভর্তি হন রাজশাহী কলেজ এবং সেখান থেকে অর্থনীতিতে অনার্স সহ বি.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন ১৯৫৬তে।

অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ সময় তিনি প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সাথে বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৫৮ তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রী অর্জন করেন।

এরপর জীবিকার সন্ধানে তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এ সময় তিনি পাকিস্তানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৬১ ব্যাচের সিএসপিদের মধ্যে তিনি ৪র্থ স্থান লাভ করেন এবং পাকিস্তান সরকারের উচ্চ পদে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স থেকে ‘উন্নয়ন প্রশাসনে’ পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন। শুরুতে তিনি রাজশাহী কালেক্টরেটে তিনি ১৯৬২-১৯৬৩ মেয়াদে অ্যসিন্ট্যান্ট কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।

এরপর তিনি পদোন্নতি লাভ করেন এবং ১৯৬৩-১৯৬৪ মেয়াদে নওগাঁ মহকুমা মহকুমা প্রশাসক বা এসডিও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর তিনি নারায়ণগঞ্জ মহকুমার এসডিও হিসেবে বদলী হন এবং প্রায় এক বৎসর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৫ তে তিনি ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন।

১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম ক্যাবিনেট সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর পর তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে ক্যাবিনেট সচিবের দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। ১৯৭৫-এর ২৬ আগস্ট পর্যন্ত তিনি ক্যাবিনেট সচিবের পদে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত সাভারস্থ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৪ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত তিনি সড়ক এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব-এর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত পরিকল্পনা সচিবের পদে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া যমুনা মাল্টিপারপাজ ব্রিজ অথরিটির এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৭১ এর মার্চ মাসে তিনি রাঙ্গামাটি জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর দায়িত্বে ছিলেন।

২০০৯ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা নিয়োগ করেন। ২০১৪ তে তাকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দলীয় নির্বাচনি পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান। অধিকন্তু তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। -উইকিপিডিয়া।

বার্তাবাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর