৫ম ধাপে ২ হাজার ২৫৭ জন রোহিঙ্গা পৌঁছেছে ভাসানচরে

রোহিঙ্গাদের আনুষ্ঠানিক স্থানান্তরের অংশ হিসাবে পঞ্চম ধাপের প্রথম অংশে ভাসানচরে পৌঁছেছে আরো ২ হাজার ২৫৭ জন রোহিঙ্গা।

বুধবার সকালে নৌ-বাহিনীর ৬টি জাহাজে চট্রগ্রাম থেকে রওয়ানা হয়ে তারা দুপুর দুইটার সময় হাতিয়ার ভাসানচরে পৌচেছে।

ভাসানচরে আসার পরপরই তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন গনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরা। এসময় ঘাটে উপস্থিত ছিলেন নৌ-বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

বিভিন্ন ধাপে ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে বুধবার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ২ হাজার ২৫৭ জন রোহিঙ্গা একসাথে পৌঁছেছে। এদের মধ্যে ৫শত ৬৩ জন পুরুষ, ৬শত ৬৫ জন মহিলা ও ১ হাজার ২৯ জন শিশু রয়েছে।

বুধবার ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গা দলটিকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় আশ্রায়ন প্রকল্পের ওয়্যার হাউজে। সেখানে নৌ-বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে ভাসানচরে বসবাসের বিভিন্ন নিয়ম কানুন সম্পর্কে ধারনা দেয়। ওয়্যার হাউজে তাদেরকে দুপুরের খাওয়ানো হয়। পরে বিকালে তাদেরকে তাদের জন্য তৈরি আবাসস্থল বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

নৌ-বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, পঞ্চম ধাপের এটি প্রথম অংশ। আগামী কাল বৃহস্পতিবার আরো দুই হাজারের মত রোহিঙ্গা ভাসানচরের আসার কথা রয়েছে। এ জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এর আগে স্থানান্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বুধবার সকালে চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে নৌবাহিনীর ছয়টি জাহাজে করে ২ হাজার ২৫৭জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।।

নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছান এই রোহিঙ্গারা। স্বেচ্ছায় ভাসানচরে আসতে উখিয়া কলেজ মাঠে ট্রানজিট পয়েন্টে জড়ো হন রোহিঙ্গারা। মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে প্রথম দফায় ২১টি গাড়িতে ২ হাজার ২৫৭ জনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। এর আগে চার দফায় নোয়াখালীর ভাসানচরে আবাসন নিশ্চিত করেছে ৯ হাজার ৫শত ৩৬ জন রোহিঙ্গা।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার দফায় কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে ৯ হাজার ৫শ’ ৩৬ জন রোহিঙ্গা। প্রথম দফায় গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে গেছেন। এরপর ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে যান ১ হাজার ৮০৫ জন ও তৃতীয় ধাপে দুইদিনে ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি ৩ হাজার ২০০জন রোহিঙ্গাদের ভাসানচর স্থানান্তর হয়। এছাড়া চতুর্থধাপের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম দিন ২ হাজার ১০জন ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ৮ শত ৭৯ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া কলেজের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্প ত্যাগ করে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরান হোসেন বলেন, ভাসানচরের আশ্রয়শিবিরে মোট এক লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ইতিমধ্যে প্রায় ৩হাজার ৫শত কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে যাতে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা শুরু হলে পরের কয়েক মাসে অন্তত আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এর আগে আসেন আরও কয়েক লাখ। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ।

জিল্লুর রহমান রাসেল/বার্তাবাজার/পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর