পর্দা উঠল পাবনা একুশে বইমেলার
প্রতিবছর ভাষার মাসে বইমেলা শুরু হয় সারা বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকার সাথে তাল মিলিয়ে জেলা শহর পাবনাতেও হয়ে থাকে এই মেলা। তবে করোনাকালীন মহামারির জন্য মার্চের প্রথম থেকে শুরু হলো পক্ষকালব্যাপী বই মেলা।
সোমবার (১লা মার্চ) সন্ধ্যা থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল পৌর মুক্তমঞ্চ (টাউন হল) ময়দানে শুরু হয়েছে বই মেলা।
শতবর্ষী এই জেলায় প্রতি বছরই বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আয়োজন করে পাবনা বইমেলা উদযাপন পরিষদ। রাজধানী ঢাকার বাহিরে মফস্বল শহরে এই জেলাতেই সবচেয়ে বড় বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে বিকেল পৌনে ৬টায় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পাঠের মাধ্যমে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক কলামিস্ট রণৈশ মৈত্র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. গোলাম হাসনাইন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বইমেলা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কমরেড জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পাবনা -১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু এমপি।
তিনি বলেন, বই আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। আর বইমেলা বাঙালি সংস্কৃতির অংশ। রাজধানী ঢাকার পরেই বৃহত্তর এই জেলায় সবচেয়ে বড় বইমেলা উদযাপন হয়ে আসছে।
তিনি আফসোস করে বলেন, বর্তমান ফেসবুক ইন্টারনেটের যুগে যুব সমাজ বইপড়া থেকে অনেক দুরে চলে যাচ্ছে। ছেলে-মেয়েরা বই পড়তেই চায়না। তারা শুধু নেট নিয়ে বসে থাকে। বইপড়া শূন্যের কোঠায় নেমে আসছে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, জেলা আওয়ামী লীগে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল, পুলিশ সুপার মোহা: মহিবুল ইসলাম খান, পাবনা পৌরসভার মেয়র শরিফ উদ্দিন প্রধান, নাগরিক মঞ্চের আহবায়ক ইদ্রিস আলী বিশ্বাস, পাবনা বার সমিতির সভাপতি এডভোকেট বেলায়েত আলী বিল্লু প্রমুখ।
নাট্য ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন, মেলা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক হাবিবুর রহমান স্বপন।
উদ্বোধনী আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা কয়েকটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
আয়োজকেরা জানান, বইমেলার সাথে একযোগে চলবে দুর্লভ বইয়ের প্রদর্শনী। পাঠক ও দর্শনার্থীরা বই কেনার পাশাপাশি পরিচিত হতে পারবেন ঐতিহাসিক পুস্তকের সঙ্গে।
প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে মেলামঞ্চে হবে বই নিয়ে আলোচনা। আলোচনায় জেলার বিভিন্ন এলাকার শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঠকেরা অংশ নেবেন। এ ছাড়া থাকবে জেলার লেখকদের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক।
একই সাথে এই বছরের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্ত সাহিত্যিক গোলাম হাসনাইনকে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
এবারের বই মেলায় ৪৪টি স্টল বরাদ্ধ দেওয়া হযেছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বইমেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করা যাবে। সবাইকে মাস্ক পড়ে স্বাস্থবিধি মেনে মেলায় আসার আহবান জানিয়েছেন। সর্বশ্রেণীর জন্য টাউন হল ময়দান উম্মোক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
মোঃ মাসুদ রানা/বার্তাবাজার/হৃ.আর