আ.লীগের দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি সংর্ঘষ, আহত-১৫

বরগুনার আমতলীতে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংর্ঘষে আহত হয়েছে ১৫ জন। উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা পন্ড হয়েছে।

সোমবার (১লা মার্চ) সকাল ১২টায় আমতলী উপজেলা পরিষদে এ সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ (সোমবার) সকাল ১১টায় আমতলী উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ধার্য ছিল। সমন্বয় সভায় পরিষদের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ যথা সময়ে উপস্থিত হলে বেলা ১২টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান ৫ শতাধিক মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা সহকারে পরিষদ চত্তরে উপস্থিত হন।

এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ফোরকানের পক্ষ ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমানের সমর্থকেরা শ্লোগান ও পাল্টাপাল্টি শ্লোগানে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়।

পুলিশ এসে লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে। ১০টি মোটর সাইকেল ভাংচুর ও সিরাজ পঞ্চায়েত (৪০), জাহাঙ্গীর (৩৫), জহিরুলসহ (৩৪) উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান বার্তা বাজারকে বলেন, আমি ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সদস্যরা নির্ধারিত মাসিক সমন্বয় সভায় যোগদান করার জন্য উপজেলা পরিষদ মিলনায়নে উপস্থিত হই। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান ও তার ছোট ভাই পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটনের নেতৃত্বে ছাত্রদল, যুবদলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা করে উপজেলা পরিষদে আসেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে সংর্ঘষের ঘটনায় চেয়ারম্যান সমর্থক ৬জন কর্মী আহত হয়েছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান মুঠোফোনে বার্তা বাজারকে বলেন, আজকে উপজেলা পরিষদের কোন মাসিক সমন্বয় সভা ছিলো না। আমার সাথে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও দুইজন সদস্য ছিলো। তাছাড়া গ্রাম-গঞ্জ থেকে সমর্থকরা আমার সাথে দেখা করতে এসেছিলো। তাদেরকে নিয়ে আমি আমার অফিসে গিয়েছি। চেয়ারম্যান গ্রুপরা আমার ৯কর্মীকে মারধর করেছে। এদের মধ্যে ৩জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। ৮/১০টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করেছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বার্তা বাজারকে বলেন, কোরাম সংকটের কারনে অনেক দিন যাবৎ সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো না। আজ সমন্বয় সভা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সংর্ঘষের কারনে সভাটি পন্ড হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এসএম তারেক রহমান বার্তা বাজারকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। পৌর শহরে বিভিন্ন পয়েন্টে ডিবিসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল ঋণ খেলাপীর দায়ে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী অপর প্রার্থী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজু বরগুনা নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল এক আদেশে আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকানকে আমতলী উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজুকে আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন এবং ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ প্রদান করেছেন। গোলাম সরোয়ার ফোরকান উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালতে আবেদন করলে ২৮ ফেব্রুয়ারি তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।

মোঃ মেহেদী হাসান/বার্তাবাজার/হৃ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর