সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা: ৮ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে চাঞ্চল্যকর সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৮ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আজ রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রবিউল আলম এ দিন ধার্য করেন। মামলার সাক্ষগ্রহণের দিন এদিন ধার্য ছিলো। জামিনে থাকা আসামি সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৮ মার্চ দিন ধার্য করেন।

এদিন মামলার বাদী নিহতের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তার জেরা শেষ না হওয়ায় বিচারক জেরা ও পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সগিরা মোর্শেদ সালাম ১৯৮৯ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে মেয়েকে আনতে যান। বিকেল পাঁচটার দিকে সিদ্ধেশ্বরী রোডে মোটরসাইকেলে আসা ছিনতাইকারীরা তার হাতে থাকা স্বর্ণের চুড়ি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। সগিরা নিজেকে বাঁচাতে দৌঁড় দিলে তাকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।

ওই ঘটনায় সেদিনই রমনা থানায় মামলা করেন তার স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী। পরে মিন্টু ওরফে মন্টু ওরফে মরণের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিক। সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় সাতজনের। সাক্ষীতে মারুফ রেজা নামে এক ব্যক্তির নাম আসায় অধিকতর তদন্তের আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

ওই বছরের ২৩ মে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা (১০৪২/১৯৯১) করেন মারুফ রেজা। যিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকটাত্মীয় ছিলেন। ১৯৯১ সালের ২ জুলাই ওই তদন্তের আদেশ ও বিচারকাজ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তদন্তের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। ১৯৯২ সালের ২৭ আগস্ট ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার বিচারকাজ স্থগিত থাকবে মর্মে আরেকটি আদেশ দেয়া হয়।

২০১৯ সালের ২৬ জুন এ মামলার ওপর ২৮ বছর ধরে থাকা স্থগিতাদেশ তুলে নেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলা ৬০ দিনের মধ্যে পিবিআইকে অধিকতর তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দেন।

একই বছরের ২০ নভেম্বর পিবিআইকে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তদন্তের জন্য আরও ৬০ দিনের সময় দেন। এরপর পিবিআই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে। চারজনই হত্যার দায় স্বীকার করে বিচারিক আদালতে জবানবন্দি দেন।

২০২০ সালের গত ৯ মার্চ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ এ মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।

এর আগে গত বছরের ১৬ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে সগিরার ভাসুরসহ চারজনকে আসামি করে ১ হাজার ৩০৯ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।

মামলার আসামিরা হলেন- সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান এবং ভাড়াটে খুনি মারুফ রেজা।

বার্তাবাজার/ভি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর