পৌর নির্বাচন: ভোটারদের সরিয়ে নৌকায় ভোট দিচ্ছে নৌকার এজেন্টরা!

পঞ্চম ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভার একাধিক ভোট কেন্দ্রে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আঙুলের ছাপ নিয়ে বৈধতা যাচাইয়ের পর ভোটারদের অনুমতি দিচ্ছেন কালো পর্দার আড়ালে গিয়ে ভোট প্রদানের জন্য। কিন্তু জোরপূর্বক ভোটারদের সরিয়ে মেয়র পদে নৌকায় ব্যালট সাবমিট করছেন নৌকার এজেন্ট নিজেই।

ভোট কারচুপি তদারকিতে প্রতিটি কেন্দ্রে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের স্বতস্ফুর্ত উপস্থিতি দেখা যায়। সার্বক্ষণিক ভোট কেন্দ্রগুলোতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেলেও ইভিএম-এ ভোট কারচুপির বিষয়ে তাদের নিরব ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়।

ভোটারদের অভিযোগ, কালো পর্দার আড়ালে মেয়র পদে ১টি এবং কাউন্সিলর পদে ২টি ইভিএম ব্যালট ট্যাব থাকলেও মেয়র পদের ব্যালট ট্যাবটি নৌকার এজেন্ট জোর করে দখল করে নেন এবং এজেন্ট নিজেই নৌকায় ভোট সাবমিট করেন।

সকাল ৯টায় রায়পুর মার্চেন্টস একাডেমি কেন্দ্রে ভোট কারচুপি চলছিল। এসময় নৌকার এজেন্টদের তদারকি করছিলেন রায়পুর উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক তানভির হায়দার রিংকু। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রিজাইডিং অফিসার রাকিব হাসান শোভন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওই নেতা ও তার অনুসারীদের বের করে দেন।

সকাল সাড়ে ১০টায় রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদের উপস্থিতিতে ভোট কারচুপি হয়। এসময় ভোট কারচুপির ভিডিও ধারণ করতে গেলে এক সাংবাদিকের ক্যামেরা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন তিনি।

একইভাবে রায়পুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ, রায়পুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শায়েস্তানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বহিরাগত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ভোট কারচুপির দৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

এদিকে, বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এবিএম জিলানী বার্তা বাজারকে বলেন, প্রত্যেকটি কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। তারা ভোটারদের পরিবর্তে নিজেরাই ইভিএম ব্যালট ট্যাবে নৌকায় ভোট সাবমিট করছে। আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি, কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বার্তা বাজারকে বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। কোথাও কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা এ নির্বাচনের শুরু থেকেই বিভিন্ন ভুয়া অভিযোগ তুলে গুজব ছড়াচ্ছে।

পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান বার্তা বাজারকে জানান, ভোটারদের স্বতস্ফুর্ত উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো হানাহানি বা বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকজন প্রার্থীর বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ রয়েছে।

শাকের মোহাম্মদ রাসেল/বার্তা বাজার/হৃ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর