৫ কেজি চাল চুরির ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রান্নাঘর থেকে চাউল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রান্না ঘরের দায়িত্ব থাকা লাইলী খাতুনের বিরুদ্ধে চুরির অভিযােগ উঠেছে।

বিষয়টি নিয়ে লাইলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। তবে লাইলী চুরি করেছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখছে কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রান্নাঘরে ঠিকাদারের সরবরাকৃত চাউলের মধ্য থেকে ৫কেজি চাউল চুরি হয়। চুরির ঘটনায় লাইলীকে দােষারােপ করেন ঠিকাদার ইয়াছিন আলী।

এ ঘটনায় লাইলী খাতুনকে কৈফিয়ত তলবসহ ঘটনা তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। এরপর ২২ জানুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এম রিয়াজুল আলম বার্তা বাজার কে বলেন, লাইলী খাতুনকে বারবার সতর্ক করা সত্বেও কেন ৫ কেজি চাল চুরি করা হয়েছে এ বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া চাল চুরির বিষয়টি চাকুরী ও
শৃঙ্খলা বিধির পরিপন্থি একারনে লাইলী খাতুনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও বদলির সুপারিশ কেন করা হবেনা তা আগামি ৩ কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে।

এদিকে চাল চুরির ঘটনা তদন্তে ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: হামিদুল ইসলামকে সভাপতি ও এস এস এন মোছা: রাফিজা খাতুনকে সদস্য ও এমটি ইপিআই মো: আব্দুর রশিদকে সদস্য সচিব করে ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।

ঠিকাদার ইয়াসিন আলী ও তার প্রতিনিধি ইমরান হোসেন বার্তা বাজারকে জানান, গত শনিবার ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে একটি বালতিকে করে উৎসৃষ্ট ভাতের সাথে ব্যাগ ভর্তি ৫ কেজি চাল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় হাতেনাতে ধরি। পরে এ ঘটনা গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এম রিয়াজুল আলমের কাছে লিখিত আবেদন করলে তিনি তদন্ত কমিটি ও বাবুর্চী লাইলী খাতুনকে কৈফিয়ত তলব করেছেন।

তিনি বার্তা বাজারকে আরো বলেন, রুগীদের জন্য মানসম্মত খাবার দেয়া হলেও বাবুর্চী লাইলীর কারনে মানসম্মত খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারকে জিম্মি করে লাইলী খাতুন রুগীদের খাদ্য খাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে চালসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বিক্রির অভিযোগও উঠেছিলো।

রুগীরা জানান, বাবুর্চী লাইলী খাতুন নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করে। রান্নার মান নিম্নমান ও নোংরা খাবার খেয়ে রুগীরা আরো অসুস্থ হতে পারে এমন আশঙ্কা অনেক রুগী তাদের খাবার নেয়া থেকে বিরত থাকেন।

এ বিষয়ে বাবুর্চী লাইলী খাতুনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। এমনকি কয়েকবার হাসাতালের রান্না ঘরে গিয়েও তার দেখা মেলেনি।

এদিকে বিভিন্ন সময়ে রুগীদের খাদ্য কম দেয়া, রান্নার মান নিম্নমানের হওয়া ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্নার বিষয়ে অভিযোগ উঠলে মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন পরিদর্শনে গিয়ে বাবুর্চী লাইলী খাতুনসহ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তদন্ত কমিটির সভা ও ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: হামিদুল ইসলাম বার্তা বাজারকে বলেন, ইতোমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। দুইজনের বক্তব্য নেয়া হয়েছে আরো কয়েকজনের বক্তব্য নিয়ে আগামী সোমবার পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেন।

মাসুদ রানা/বার্তাবাজার/হৃ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর