আবারও সেই বেগমগঞ্জ: মেয়েকে ধর্ষণের পর মাকেও কুপ্রস্তাবের অভিযোগ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে (১৭) অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একাধিকবার ধর্ষণ ও অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর মাকেও অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের জন্য কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নে ঘটা এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে বেগমগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই মা।

তিনি জানান, তার মেয়ে ২০১৮ সালে স্থানীয় মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো। মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে জোবায়ের, ইমন, রাসেল ও ফয়সালের নামের কয়কজন যুবক তাকে উত্যক্ত করতো। বিষয়টি জানার পর তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান ও আব্দুল কাদেরের কাছে নালিশ করেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটেরা ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ কৌশলে তার ঘরে প্রবেশ করে সেখানে থাকা কোমল পানীয়ের সাথে চেতনানাশক দ্রব্য মিশায়। সেটা পান করে তিনি অচেতন হয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গেলে ফয়সাল ও জোবায়ের নামে দুই যুবক ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার মেয়ে্কে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একই সাথে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখে তারা।

তিনি আরও জানান, একই রাতে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে তার ঘরে এনে তাকে বিবস্ত্র করে তার মেয়ের সাথে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে। এসময় ওই দুই বখাটে ঘরের আলমারি থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা ও স্বর্ণের অলঙ্কার নিয়ে যায়।

এই ঘটনার কিছুদিন পর ভুক্তভোগী মেয়েটিকে লক্ষ্মীপুরে বিয়ে দেন তিনি। স্বামীর বাড়ি থেকে তার মেয়ে বেড়াতে এলে ২০২০ সালের ৫ মার্চ গভীর রাতে ইমন ও রাসেল তার ঘরে ঢুকে মুখে রুমাল চেপে অচেতন করে ফেলে তাকে। সেই রাতে তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা।

এই ঘটনার মাস তিনেক পর তিনি রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার বিনিময়ে তার মেয়েকে ঢাকার মিরপুরের জান্নাত নামে এক নারীর কাছ থেকে উদ্ধার করেন। এই তিন মাস মেয়েটি একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়। এরপর বিভিন্ন সময় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে তারা।

২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর মেয়েকে আবারও অপরহরণ করা হয়। তখন মেয়ের সন্ধানে ইমনের কাছে যান তিনি। তখন ইমন তার সাথে শারীরিক সম্পর্কের বিনিময়ে মেয়েকে ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু প্রস্তাবে রাজি না হওয়া শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত মেয়ের কোনো সন্ধান পাননি তিনি।

দায়ের করা অভিযোগে উপজেলার হীরাপুর গ্রামের লেলন মিয়ার ছেলে জোবায়ের (২৩), কামাল হোসেনের ছেলে রাসেল (২৬), কাজী সিরাজের ছেলে ফয়সাল (২২) ও নূর ইসলামের ছেলে ইমনের (২৩) নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইমন ও ফয়সালকে আটক করেছে।

এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ থানার ওসি কামরুজ্জামান সিকদার জানান, এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে চারজনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের পাশাপাশি ভুক্তভোগী মেয়েটিকে উদ্ধারেও আমাদের অভিযান চলছে।

বার্তাবাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর