আসন্ন বাজেটে ঝিনাইদহে ৩ দাবি

খাইরুল ইসলাম নিরব, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমা লের সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহ। স্বাধীনতার পর থেকেই খাদ্য উদ্বৃত্ব এ জেলা। জেলায় উৎপাদিত কলা ও পান জেলা ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। তবে জেলায় নেই কোন বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। কালীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত সুগার মিলে দিনের পর দিন কোটি কোটি টাকার লোকসানে গুনতে হচ্ছে। কাঁচামালের সহজলভ্যতা থাকার পরও জেলায় গড়ে ওঠেনি বড় কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান। আগামী ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটে জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। এ বাজেট কেমন হবে, কোন খাতে কত অর্থ বরাদ্দ করা হবে তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষন শুরু হয়েছে শহর থেকে গ্রামে। নতুন অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট হওয়ায় জনগনের মধ্যে প্রত্যাশা অনেক বেশী। জেলাবাসী বলছেন, জেলা ভিত্তিক বাজেট প্রনয়ণ করে জেলায় গড়ে তোলা হোক শিল্প ও কৃষি ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান। সেই সাথে সংযোগ দেওয়া হোক রেল লাইনের। তবেই উন্নয়ন হবে জেলার। সেই সাথে বাড়বে মানুষের জীবনযাত্রার মান। আর সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান।

মানবাধিকার কর্মী ও সিনিয়র সাংবাদিক আমিনুর রহমান টুকু বলেন, জেলায় শিল্প কারখানার অভাব। শিল্প প্রতিষ্ঠান না থাকার কারণে জেলায় কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। জেলায় যে বিসিক রয়েছে তার দীর্ঘদিন রুগ্ন অবস্থায় রয়েছে। আমার পরামর্শ জেলা ভিত্তিক বাজেট প্রণয়ন করে এ জেলায় শিল্প ও কৃষি ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা উচিত। এনজিও কর্মকর্তা সিও সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সামছুল আলম বলেন, ঝিনাইদহ জেলার মানুষ বরাবরই কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাই এবারের বাজেটে জেলায় কৃষি খাতে বেশি বেশি বরাদ্ধ দেওয়া সরকারের উচিত বলে তিনি মনে করেন।

সাংস্কৃতিক কর্মী নাজিম উদ্দিন জুলিয়াস বলেন, ঝিনাইদহ জেলা কৃষি ভিত্তিক অ ল হলেও এ জেলার কালীগঞ্জ ও কোটচাদপুর উপজেলার উপর দিয়ে রেল লাইন গেলেও জেলা সদরের সাথে রেল লাইনের সংযোগ না থাকায় কৃষিতে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে জেলার কৃষকেরা। তাই তিনি রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন জেলার সাথে দ্রুত সংযোগ পেতে জেলা শহরে রেল লাইন স্থাপনের দাবি জানান।

প্রবীণ সাংবাদিক বিমল কুমার সাহা বলেন, প্রত্যেক এলাকায় সমতা ভিত্তিক বাজেট প্রণয়ন করে উন্নয়ন করা দরকার। যাতে দেশের কোন এলাকায় পিছিয়ে না থাকে। দক্ষিন-পশ্চিমা লের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত ঝিনাইদহ জেলা। এ জেলায় স্বাধীনতার এতবছর পরও শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি। ফলে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ ও সৃষ্টি হয়নি। কাজের সন্ধানে এ জেলার শিক্ষিত যুবকরা বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। এবারে বাজেটে ঝিনাইদহ জেলা উন্নয়নের খাতে বেশি বরাদ্ধের দাবি রাখি।

সাবেক উপাধ্যক্ষ এন এম শাহজালাল বলেন, অনেক আগে ঝিনাইদহে রেল সংযোগ ছিল। যদিও এখন কোটচাঁদপুর ও কালীগঞ্জে সংযোগ আছে তাতে জেলাবাসীর কোন উপকারে আসে না। আসন্ন বাজেটে জেলার রেল লাইন সংযোগের ব্যবস্থা করলে জেলার উন্নয়ন আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।

কৃষিবিদ জিএম আব্দুর রউফ বলেন, ঝিনাইদহ জেলার বরাবরই খাদ্যে উদ্বৃত্ব। এ জেলার উৎপাদিত নানা পন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। জেলার কৃষি ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান বা বিশেষায়িত কোন হিমাগার নির্মান করা হলে কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের সারাবছর পাবে। ৬ টি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ জেলায় জনসংখ্যা প্রায় ১৮ লাখ। যার সিংহভাগ মানুষই কৃষি নির্ভর।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর