অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন (ভিডিওসহ)

তারিকুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি: শেরপুরের নকলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ডলি খানম (২২) নামে এক অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূকে গাছের সাথে হাত-পা বেঁধে বর্বরোচিত নির্যাতন এবং ওই নির্যাতনে গৃহবধূর গর্ভের সন্তান বিনষ্টের অভিযোগ ওঠেছে। প্রায় এক মাস আগে ওই নারীকে নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র সোমবার রাতে ফাঁস হওয়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ডলি খানম নকলা পৌর শহরের কায়দা এলাকার দরিদ্র কৃষক শফিউল্লাহর স্ত্রী ও স্থানীয় চন্দ্রকোনা কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় অসহায় শফিউল্লাহ গত ৩ জুন শেরপুরের আমলী আদালতে তার ভাই আবু সালেহ সহ ৫ জনকে স্ব-নামে ও আরও অজ্ঞাতনামা ৫/৭ জনকে আসামী করে একটি নালিশী মামলা দায়ের করছেন। আদালতের বিচারিক হাকিম শরীফুল ইসলাম খান ভিকটিমের এমসি তলব (ডাক্তারি পরীক্ষার সনদ) সাপেক্ষে ঘটনার বিষয়ে তদন্তপূর্বক ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জামালপুর পিবিআই’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন।

ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, একটি ধানক্ষেতের আইলের পাশে থাকা একটি ইউক্যালিপটাস গাছের সাথে পেছনে হাত রেখে বেঁধে দুই পা রশিতে বাঁধছেন বোরখা পড়া দুই নারী। ডলি খানম দাপাদাপি করছেন। একপর্যায়ে দুই পা বেঁধে সেই বাঁধা দুটিকে বোরখার ওড়না দিয়ে পাশের অন্য গাছের সাথে টানা দিয়ে বেঁধে ফেলা হয় তার ২ পা। এভাবেই ডলি খানমের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পাশে দাঁড়ানো গায়ে পাঞ্জাবি, মাথায় টুপি চোখে চশমা পরিহিত এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে কথা বলছেন। পাশে আরও কয়েকজন মহিলা এবং কয়েকজনকে দেখা যায়।

১১ জুন মঙ্গলবার বিকেলে নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী শফিউল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, নকলা পৌর শহরের উপকণ্ঠ কায়দা গ্রামের মৃত হাতেম আলীর পুত্র মোঃ শফিউল্লাহর সাথে এক খ- জমি নিয়ে তার সহোদর বড় ভাই আবু সালেহ (৫২), নেছার উদ্দিন (৪৮) ও সলিম উল্লাহর (৪৪) বিরোধ ও দেওয়ানী মোকদ্দমা চলে আসছিল। জমিসংক্রান্ত ওই বিরোধের জের ধরে বড় ভাই ও ভাবীরা ভাড়াটে লোকজন নিয়ে তার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী ডলি খানমকে বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়ে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দিয়েছে। তিনি এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবী করেছেন।

বিষয়টি সম্পর্কে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, জমি-জমার বিষয় নিয়ে ভাই-ভাইদের মধ্যে বিরোধ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামার আশঙ্কার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে দু’পক্ষকেই শান্ত করা হয়েছিল। গৃহবধূকে নির্যাতনের বিষয়ে কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে জামালপুর পিবিআই’র দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রাণী সরকার বলেন, মামলাটি এখনও হাতে পাইনি। পেলে অবশ্যই দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভিডিও….

অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, অকাল গর্ভপাত

অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন,অকাল গর্ভপাতরিপোর্ট – তারিকুল ইসলাম, শেরপুর বিস্তারিত =https://bartabazar.com/archives/26725

Gepostet von Barta Bazar am Mittwoch, 12. Juni 2019

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর