শেরপুরে আলু গাছের ডগায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

বাংলাদেশের উত্তরের শস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত বগুড়া জেলা। এই জেলার শেরপুর উপজেলার ধান চাষের জন্য বিখ্যাত হলেও অধিক লাভের আশায় এই অঞ্চলের কৃষকরা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিন দিন রবি ফসল চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

তাই চলতি রবি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দামের আশা করছেন কৃষকরা। আলুসহ অন্যান্য রবি শস্যের লাভ থেকে কয়েক দফার বন্যায় ক্ষতি হওয়া আমন ধানের লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন তারা।

শেরপুর উপজেলার করতোয়া ও বাঙালি নদীর দুই তীরে শোভা পাচ্ছে আলুর গাছের সবুজের সমারোহ। নদীর দুই তীরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দোল খাচ্ছে আলু গাছের তরতাজা সবুজ পাতা। নদীর দুই কুল ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আলু চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন কৃষক।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো ২৬২৫ হেক্টর জমি। কিন্তু আলুর চাষ হয়েছে ২৬৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষমাত্রার চেয়ে ২৫ হেক্টর জমিতে বেশি আলু চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা কৃষি অফিসের পরামর্শে অধিক ফলনশীল জাতের কাটিনা ডায়মন্ড, উফসি ও স্থানীয় জাতের আলু চাষ করেছে। যদিও উপজেলাতে এখনো পুরোদমে জমি থেকে আলু তোলা শুরু হয়নি। তবুও যে কৃষকরা আগাম জাতের আলু চাষ করেছিলেন তারা কিছু কিছু আলু তোলা শুরু করেছেন। আর কয়েকদিন পর থেকে পুরো দমে আলু তোলা শুরু হবে।

তবে চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম থাকায় কৃষকরা প্রতি হেক্টর জমিতে ১৫ থেকে ২০টন আলুর ফলন পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে বাজারে আলুর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় আলু চাষীরা আলু বিক্রির লাভ থেকে কয়েক দফার বন্যায় আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

এ ব্যাপারে শালফা গ্রামের কৃষক জেগের আলী জানান, গত বন্যায় ৪ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক ক্ষতির মধ্যে পরেছিলাম। তাই বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আলু চাষের জন্য জমি তৈরী করে কাঠিলাল আলু চাষ করেছি। গাছের চেহারা দেখে মনে হচ্ছে এবার আলুর ফলন ভালোই হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শারমিন আক্তার বলেন, শেরপুর উপজেলার ৫ ইউনিয়নেরই বুক চিড়ে বয়ে গেছে ২টি নদী। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি থৈ থৈ করলেও শুস্ক মৌসুমে নদীর চরসহ দুই কূলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কৃষকরা ফসল উৎপাদন করে থাকে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার কৃষক নদীর তীরে তাদের জমিতে আলু সহ অন্যান্য ফসল ও শাকসবজি চাষ করেছেন। এসব এলাকা এখন সবুজে ছেয়ে গেছে।

বিশেষ করে আলুর সবুজ গাছ কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক ফুটিয়ে তুলেছে। শুধু নদীর তীরবর্তি নয়, উপজেলার কুসুম্বী ও বিশালপুর ইউনিয়নেও ব্যাপক আলু চাষ করেছে কৃষকরা। চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছে। আশা করি আলু বিক্রি করে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর