দারুস সালাম থানা আ.লীগের সভাপতিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মাজহার আনামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা রজু হয়েছে। মামলার বাদী এবিএম মাজহার আনামের (৫০) স্ত্রী ফিরোজা পারভীন(৪৩)। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম থানায় নারী নির্যাতন ও যৌতুক নিরোধ আইনের ধারায় এ মামলা হয়েছে।

মামলা ও মামলার বাদী সূত্রে জানা যায়, মাজহার বাদীর সাথে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ ঘর সংসার করে আসছে তাদের ১১ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তান হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় আসামী মাজহার যৌতুকের জন্য বাদীর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বাদী দফায় দফায় বিশ লক্ষ টাকা এবং বিভিন্ন আসবাবপত্র ও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আসামী মাজহারকে প্রদান করেন। যেহেতু আসামী একজন লোভী লম্পট প্রকৃতির পরনারী আসক্ত ব্যাক্তি সেকারনে যৌতুক দেওয়ার পরেও তার লোভ দিন দিন বেড়েই চলেছে। একই সাথে একাধিক নারীর সাথে তার অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি থাকার কারনে ধারনা করা যায় যৌতুকের টাকা ঐ সকল নারীর পিছনে ব্যয় করছে।

ছবি-বার্তা বাজার

মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, গতবছর এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ বিকাল তিনটায় আসামী মাজহার অন্যান্য আসামীদের কুপ্রোরচনায় বাদীর পরিবারের নিকট হতে আরও দশলক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। যার ফলস্রুতিতে গতবছর ১২ ডিসেম্বর বিকেল তিনটায় আসামী মাজহার ও অন্যান্য আসামীরা পূর্বের দাবিকৃত দশলক্ষ টাকা চাইলে বাদী দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামীগণ তাকে শারীরিক নির্যাতন করে গুরতর আহত অবস্থায় বাদীর আত্মীয় স্বজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হসপিটালে তার চিকিৎসা করায়। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাদী একমাত্র শারীরিক এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপোষ মিমাংসার উদ্দেশ্যে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটায় আসামী এবং বাদী যে ফ্লাটে বসবাস করত সেখানে গিয়ে দেখতে পায় বাদীর আলমারির তালা ভাঙ্গা এবং বাদীর বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া পনের ভরী স্বর্নালঙ্কার, গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র বিবাদীগণ সরিয়ে ফেলেছে।

এই সময় আসামী মাজহার যৌতুকের দশলক্ষ টাকা ছাড়া বাদী কেন বাসায় ঢুকেছে এই বলে চুলের মুঠি ধরে কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে বাদী হাত দিয়ে ঠেকায়। যাতে তার হাত গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়। এসময় মামলার অপর আসামী মিলি বাদীকে এলোপাথারি কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাদীর প্রতিবন্ধী সন্তানকে মারধর করে। তখন বাদীকে অন্যান্য আসামীরা মারধর করা অবস্থায় আসামী কামরুল ইসলাম বাদীর নাকে ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে। একপর্যায়ে আসামী মাজহার বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে অন্যান্য আসামীর সহযোগিতায় বালিশ চাপা দেয়। তখন বাদীর ডাক চিৎকারে আপোষ মীমাংসার জন্য পাশের রুমে অবস্থানরত বাদীর আত্মীয় স্বজন এগিয়ে এসে বাদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা করায়।

এখানে উল্লেখ থাকে যে আসামী মাজহার আনাম ইতিপূর্বে অস্ত্রসহ বিমানবন্দর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার হয়। এছাড়াও দারুস সালাম থানায় ইতিপূর্বে দখলের অভিযোগে মামলা হয়েছিল।

বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর