দলকে সংশোধনের জন্যেই প্রতিবাদ করছি: কাদের মির্জা

আলেচিত বসুরহাট পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা বলেছেন, নোয়াখালীতে দলকে ব্যবহার করে টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী ও চাকুরী বানিজ্যসহ সকল প্রকার অপরাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি। আমি মূলত নোয়াখালীর অপরাজনীতির বিরুদ্ধে বলেছি। আওয়ামী লীগের ঘোষনা পত্রে ৫৮ পৃষ্ঠায় ৩ এর ২-এ মৌলিক চাহিদা পূরনে বলা আছে বাক, ব্যক্তি, চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। অতএব স্বাধীনতা আছে বলেই আমি সাহস করে সত্য কথা বলেছি।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে বসুরহাট পৌর কার্যালয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, আমিতো সংগঠনের বহির্ভূত কিছু করিনি, আমার বিশ্বাস, আমার প্রতি জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। কারন তিনি যেমন অপরাজনীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন ঠিক আমিও এই অপরাজনীতি ও মাদকসহ সকল প্রকার অপরাধের বিরুদ্ধে বলেছি।

তিনি বলেন, আমি মূলত দলকে সংশোধনের জন্যে এ কথাগুলো বলেছি। আল্লাহকে হাজীর নাজির রেখে বলছি আমি কখনো অস্ত্রবাজী করিনি, এই অস্ত্রবাজীর কারনে টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীসহ সকল প্রকার অপরাধ বেড়েই চলছে। মাদক বন্ধ করতে সরকারকে আরো কঠিন ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের নেতা কর্মীরা ও প্রশাসন মাদকসহ সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি। আগামীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ও কমিটিতে দায়িত্ব দেয়ার পূর্বে মাদকের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়টি যাচাই করার অনুরোধ জানান কাদের মির্জা।

নিজের এলাকায় টেন্ডারবাজীর প্রশ্নে কাদের মির্জা বলেন, আমার এখানে তো টেন্ডারবাজীর সিস্টেমই রাখিনি, যারা বাস্তবতায় টেন্ডার পাওয়ার যোগ্য নিয়মানুযায়ী তারাই পাচ্ছে, তবে তারা যে অনিয়ম বা দূর্নিতী করছেনা তা ঠিক নয়, তবে আমি তাদেরকে সংশোধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

ভাবির সাথে মনোমালিন্যের প্রশ্নে কাদের মির্জা বলেন, মূলত গত উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী নির্ধারনে আমি নোয়াখালীর এক ত্যাগী নেতার পক্ষে সাপোর্ট দিয়েছি আর উনি (ভাবি) অন্য এক নেতার পক্ষে সাপোর্ট দিয়েছে, এটা নিয়ে আমাদের মাঝে সামান্য দূরত্ব সৃষ্ঠি হয়েছে, এটা ছাড়া আর কিছুই না।

পূনরায় হরতালের প্রশ্নে কাদের মির্জা বলেন, আমাদের দাবি হচ্ছে নোয়াখালীতে অপরাজনীতি, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজি, চাকুরীবানিজ্যসহ জেলার প্রস্তাবিত কমিটি ভেঙ্গে দেয়া। দাবি আদায়ে আমরা গত ২৪ জানুয়ারী হরতালের ডাক দিলেও নেতাদের আশ্বস্ত অনুরোধে স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু জেলা সভাপতির আচরনে আমরা হতাশ, তিনিও অপরাজনীতির কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন। তাই পূনরায় আগামী রবিবার (৩১ জানুয়ারী) হরতালের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

নোয়াখালী জেলা কমিটি নিয়ে কাদের মির্জা বলেন, যারা ওয়ান ইলেভেনের পর নেত্রীকে জেলে দিয়েছে, আমাদের নেতাকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করেছে, তারা কি করে জেলা কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়, তাদের গ্রুপের ২০/২৫ জন কি করে জেলা কমিটিতে একসাথে দায়ীত্বে আসে। এই জেলা কমিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বেগমগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছে। নোয়াখালী শহরে আজ ত্যাগী নেতাদের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ছিলো কিন্তু প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারী করেছে। এই অপরাজনীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আজ আমি অপরাধীদের শত্রু হলেও জনগনের কাছে শত্রু নই।

আলোচনা সমালোচনার বিপ্লব ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় নেতা হতে চান কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হতে চাইনা, জেলা কমিটিতেও আমি যেতে চাইনা এবং যাবো না। আমি আমার জনগনকে নিয়ে কোম্পানীগঞ্জের আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্য হিসেবে কাজ করতে চাই, আমরা প্রকৃত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক।

বুরহান উদ্দিন/বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর