দেশের উন্নয়নে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে সচেতন থাকতে হবে: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান বলেছেন, যে কোনো মতবিরোধ বা মতভিন্নতা আলাপ আলোচনা করে সমাধান করা যায়। আলোচনার মাধ্যমে যে সমাধান আসে সেখানেই সকলের কল্যাণ নিহিত থাকে।

প্রতিমন্ত্রী সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ময়মনসিংহে টাউন হলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয় আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিভাগীয় শহরে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জীবন ও কর্ম এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় তাঁর অবদান’’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় বিষয়ে উস্কানি দিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায়। এ বিষয়ে দেশে আলেম, ইমাম, খতীবসহ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে সচেতন থাকতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্মীয় বিষয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল। তিনি ওলামা মাশায়েখদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে করোনা মহামারির মধ্যে হাফেজিয়া মাদ্রাসা, নূরানী মাদ্রাসা এবং কওমী মাদ্রাসাসমূহ চালু রাখার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তিনি ভেবেছেন, নিয়মিত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, পবিত্র হাদিসের অধ্যয়ন করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে নিয়মিতভাবে দোয়া করলে আল্লাহতায়ালা করোনাভাইরাস থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করবেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন উদার চেতনার অধিকারী একজন খাঁটি ঈমানদার মুসলমান। তিনি কখনও ইসলামকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেননি। মানবতাবাদী নেতা হিসেবে তিনি বাংলাদেশকে সকল ধর্মের মানুষের জন্য শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট ছিলেন।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট নিজ নিজ সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও কল্যাণে বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকের বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি একটি কাঙিক্ষত বিষয়, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার এদেশে যে কোনো মূল্যে বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতার মূলনীতি যুক্ত করে মূলত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর করে গিয়েছেন। তারই সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আদর্শ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আজকের পৃথিবীতে যে দেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী যত বেশি নিরাপদও ভালো অবস্থায় আছে সে দেশকে ততটা সভ্য ও উন্নত দেশ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি ব্যারিস্টার মোঃ হারুন অর রশিদ বিপিএম, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক, মোঃ মিজানুর রহমান, ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান পিপিএম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর পরিচালক ড. আব্দুস ছালাম প্রমুখ।

বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর