সিংড়ার শোলাকুড়ার ভাঙ্গা বাঁধ হয়নি মেরামত, বাঁধের মাটি বিক্রি করছে প্রভাবশালীরা

পানির স্রোতে ভেসে যাওয়া নাটোরের সিংড়া উপজেলার আলোচিত সেই শোলাকুড়া গ্রাম। বন্যার পানির স্রোতে ভেসে যায় প্রায় অর্ধশত বাড়ি ঘর সহ স্থাপনা। আজো সেই ভাঙ্গা অংশ করা হয়নি ভরাট বা মেরামত।দগ দগে ক্ষতের মতো আজো এলাকাবাসীর কাছে যা যন্ত্রণা ছড়াচ্ছে। অথচ শোলাকুড়া এলাকার ভেঙ্গে যাওয়া সেই মাটি এখন বিক্রি হচ্ছে অন্যত্র।

এমন খবর বার্তা বাজার এর কাছে আসলে সরজমিনে যায় বার্তা বাজার প্রতিবেদক। গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গন থেকে প্রায় ১০০মিটার দুরে, চলন-বিলের কিছু অংশে জমা হওয়া সেই মাটি সত্যিই বিক্রি হচ্ছে। সেই মাটি দুইটি এস্কেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে খনন করে বিক্রি করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। কার স্বার্থে এমনটি হচ্ছে ? প্রশ্ন সচেতন মহলের।অথচ এই মাটি দিয়েই ভরাট করা যেতো ক্ষতিগ্রস্ত ভেঙ্গে যাওয়া অংশ।

স্থানীয় এলাকাবাসীরা বলছেন, যে স্থান থেকে মাটি সরে গেছে, সেই স্থানেই যদি ভরাট করা যেত তাহলে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ সরকারের অর্থ সাশ্রয় হত অপরদিকে অতি দ্রুত স্থানীয় বাসিন্দারা ফিরতে পারত তাদের নিজের সম্পত্তির উপরে।আর ট্রাক্টর চলাচলের কারণে সরু সড়কে যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটছে চলাচলকারীদের।

সরজমিনে শোলাকুড়ায় বিলের ভেতর দেখা যায়, দুটি এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে জমি থেকে ৩-৪ ফুট করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এস্কেভেটর (ভেকু) চালক জসীম জানান, স্থানীয় কাউন্সিলর ও জায়গায় মালিক তাদের জামালপুর থেকে ভাড়া করে এনেছে। গত প্রায় এক মাস যাবত তারা এখান থেকে মাটি কাটছে।

সরু রাস্তায় দুইটি ট্রাক্টর পাশাপাশি চলার কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে সাধারণ মানুষের যাতায়াত। অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকারের নির্মিত কোটি টাকার সড়ক। সামান্য বৃষ্টি হলেই চলাচলের উপযোগিতা হারাবে এসব সড়ক। ইতিমধ্যে ওভার লোডেড মাটি বাহী ট্রাক্টরের কাড়নে ভেঙ্গে গেছে সড়কের বিভিন্ন স্থান।

জানা যায়,একটি এস্কেভেটরের (ভেকু) প্রতিদিন গড়ে দুইশত ট্রাক্টর মাটি কাটে যা বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। এসব মাটি প্রায় এক হাজার টাকা গাড়ি বিক্রি করছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা। এই কর্মকাণ্ড চলছে প্রায় একমাস যাবত।

পরিসংখ্যানে দেখা যায় দুইটি এস্কেভেটর (ভেকু) দ্বারা প্রতিদিন প্রায় চারশত ট্রাক্টর মাটি বিক্রি করা হয়েছে।আর দিনে প্রায় চার লক্ষ টাকা রোজগার হলে এক মাসে প্রায় এক কোটি কুড়ি লক্ষ টাকার মাটি বিক্রি করা হয়েছে।

জমি মালিক মোঃ. রিয়াজুদ্দিন এই প্রতিবেদককে জানায়,আপনি কেন এখানে এসেছেন আপনাদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আপনাদের সংগঠনের পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে তিনি আর কিছু জানায়নি প্রতিবেদককে।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিরুল ইসলাম জানান, সংবাদ কর্মীদের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়েছেন। তিনি বার্তা বাজার কে জানান, কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এবং এস্কেভেটরের (ভেকু) ব্যাটারি জব্দ করা হয়েছে।

বার্তাবাজার/ই.এইচ.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর