রাজধানীতে ছাত্রীর সাথে শিক্ষকের কুরুচিপূর্ণ ম্যাসেজ ভাইরাল

রাজধানীর উত্তরা এলাকার উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ একটি নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানের আছে গৌরবোজ্জল ইতিহাস। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কতিপয় শিক্ষকদের কারণেই সেই সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার পথে। তেমনই এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত শিক্ষক দিদারুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটির ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। অভিযোগ উঠার পর পরই দিদারুল ইসলামকে শোকক করেছে কর্তৃপক্ষ।

একাধিক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকের এমন জঘন্য অপরাধ মুখ বুঝে সহ্য করলেও সম্প্রতি এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছে। আর বেড়িয়ে এসেছে থলের বেড়াল।

সম্প্রতি আঞ্জুমান রাদিয়া (ছদ্মনাম) ও নাসরিন প্রীতি (ছদ্মনাম) নামের শিক্ষার্থীদের মেসেঞ্জারে পাঠানো প্রভাষক দিদারুল ইসলামের অশালীন চ্যাট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়। অভিভাবকরা নড়েচড়ে উঠেন।

এ বিষয় জানাজানি শুরু হলে অভিযুক্ত দিদারুল ইসলাম তাৎক্ষণিক নিজের ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে মর্মে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। যার জিডি নাম্বার ৪৩৫ (০৬-০১-২০২১ইং)। এরপর তিনি নিজের আইডি থেকেই ফেসবুক হ্যাক হয়েছে বলে একটি স্ট্যাটাস দেন। কিছু সময় পর তার ফেসবুক আইডিটি ডিএক্টিভ করে দেন তিনি।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, ওই শিক্ষক উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক। সম্প্রতি ওই শিক্ষক আঞ্জুমান রাদিয়া নামের এক ছাত্রীকে ফেসবুকের মেসেঞ্জারে অশ্লীল প্রস্তাব দেন ও অশ্লীল ছবি পাঠাতে বলেন।

ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘অন্য কোনো ছাত্রীর সঙ্গে যাতে এসব করতে না পারে, সে জন্য আমরা ওই লেখার স্ক্রিনশট ফেসবুকে দিই। বিষয়টি মুহুর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর তিনি বিভিন্ন জনকে দিয়ে ফোন করে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছে। আমি চাই না আমাদের প্রিয় কলেজটিতে ছাত্রীরা অনিরাপদ থাকুক। এই আইডি স্যারের আইডি, আমরা বহু প্রমাণ দিতে পারবো যে, স্যার তার আইডি দিয়েই মেসেঞ্জারে ছাত্রীদের বিরক্ত করে আসছিল।’

অভিযুক্ত শিক্ষক দিদারুল ইসলাম

এ বিষয়ে দিদারুল ইসলাম বার্তাবাজারকে জানান, দিদার ইউএইচএসসি (didaruhsc) আইডিটি তার। এটি হ্যাক হয়েছিলো, থানায় এ নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।

তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আর কিছু বলতে রাজি হননি। ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন করে দেন।

উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তৌহিদুর রহমান বার্তাবাজারকে বলেন, ফেসবুকে সাবেক এক ছাত্রীর অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরেছি। বিতর্কিত শিক্ষক দিদারুল ইসলামকে এর মধ্যেই শোকজ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তিনি লিখিতভাবে একটি কাগজ দিয়ে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে পরিচালনা কমিটির সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা মিললে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে অভিভাবকদের দাবি, এখনই এই ধরণের শিক্ষকদের চাকরি থেকে অব্যহতি না দিলে ভবিষ্যতে সমস্যা আরও প্রকট হয়ে যাবে। তখন চাইলেও শিক্ষাঙ্গন থেকে তাদেরকে নির্মূল করা যাবে না।

বার্তাবাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর