“তারুণ্যের স্বপ্নের আগামীর বাংলাদেশ”

দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেলো ২০২০ সাল। শুরু হবে নতুন ইংরেজি বর্ষ ২০২১। সেই সাথে স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে গোটা বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে তারুণ্যের ত্যাগ ও শক্তির উপর ভর করে অর্জিত হয়েছিল প্রিয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। নতুন ইংরেজি বছর ও স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী উপলক্ষে কেমন বাংলাদেশ প্রত্যাশা করেন বর্তমান তরুণ প্রজন্ম? দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা বলে তাদের চোখে আগামীর বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন বার্তা বাজারের নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মোঃ ফাহাদ হোসেন।

রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধার সুষম বন্টন নিশ্চিত করা প্রয়োজন

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে যেন একের পর এক মাইলফলক ছুঁয়েই যাচ্ছে। পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে মেট্রোরেল, স্যাটেলাইট, শিক্ষা, চিকিৎসা, সড়ক প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের সুবাতাস বয়েই যাচ্ছে৷ সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম ৫৫ মিনিটে পৌছানোর ঘোষণাও আমরা দিয়ে ফেলেছি৷ কিন্তু এত কিছুর পরও আমাদের ভাবতে হবে যে ঢাকা এখন পৃথিবীর ৮ম মেগাসিটি। ২ কোটির বিশাল জনসংখ্যার ভার নেয়ার সক্ষমতা এ শহরের নেই। কাজেই স্বাধীনতার এত বছর পরে আমাদের রাজধানীকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। ঢাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দপ্তর এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ ঢাকার পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগীয় এবং জেলা শহরেও হওয়া উচিত।

রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধার সুষম বন্টন নিশ্চিত করা গেলেই দেশজুড়ে প্রতিটি মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল উপভোগ করতে পারবে৷ আমাদের দেশ হয়ে উঠবে সত্যিকারের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

নোমান বিন হারুন
শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

তারুণ্যের শক্তিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ

একটা দেশে জনশক্তির দ্বারা উন্নয়নের যে সমূহ সম্ভাবনা থাকে, তার অনেকটাই তরুণদের মধ্যে নিহিত। তবে, বাংলাদেশের তরুণদের বিরাট একটা অংশ এখনও অনুৎপাদনশীল রয়ে গেছে। তাদের কর্মশক্তির যথাযথ ব্যবহার ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছি আমরা। বেকারত্ব সমস্যার অপ্রত্যাশিত বৃদ্ধিই যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আগামী দিনের প্রত্যাশা, তরুণদের কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান, উদ্যোক্তা তৈরি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সহ নানাবিধ পদক্ষেপের মাধ্যমে অচিরেই এই বিপুল তারুণ্য-শক্তিকে ফলপ্রসূ করতে সক্ষম হবো আমরা।

তাছাড়া, দল-মত নির্বিশেষে দেশের সবাই যেদিন ‘বাংলাদেশী’ হয়ে দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত হতে পারবো, সেদিনই গড়ে উঠবে প্রকৃত বাংলাদেশ। দুর্নীতিমুক্ত, শিক্ষিত ও সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। যে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে নেতৃত্ব দিবে পুরো বিশ্বকে। দেশকে এগিয়ে নিতে আগামী দিনে নিজেকে ‘দেশের স্বেচ্ছাসেবক’ হিসেবে গড়ে তোলায় হোক বিজয়ের মাসের অঙ্গিকার।

রোকনুজ্জামান
শিক্ষাথী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

সেই বাংলাদেশ চাই যেখানে ক্ষুধার্থের কান্না কেউ শুনবে না কখনও।

হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৪৮ পেরিয়ে ৪৯ এ পড়তে যাচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা। কিন্তু সময়ের সমান্তরালে স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা পূর্নতা পায়নি অনেক ক্ষেত্রে। মাতৃভূমি সাজাতে পারিনি নিজের মত করে,দেশের নাগরিক হিসেবে আমারও কিছু চাওয়া আছে, আছে নিজস্ব কিছু ভাবনা, যা আমি মনে করি সামগ্রিক তরুণ সমাজেরই ভাবনা। আমি এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে সবুজের ওপর নিশ্চিন্তভাবে দেশের প্রতিটি মানুষ হেঁটে বেড়াবে। স্বপ্ন দেখি মানুষের নিরাপত্তায় আমার বাংলাদেশ প্রথম হবে। সেই বাংলাদেশ চাই যেখানে ক্ষুধার্থের কান্না কেউ শুনবে না কখনও। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে তরুণদের কাঁধে ভর করে এগিয়ে যাবে আমার দেশ।

এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে কারো বাক স্বাধীনতা খর্ব করা হবেনা! জীবন যাপনের জন্য শিক্ষাই হবে একমাত্র চালিকাশক্তি। এমন একটি দেশ চাই যেখানে মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না, মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করাই হবে মানুষ হিসেবে সবার দায়িত্ব। প্রাণ ভরে শ্বাস নেবার স্বাধীনতা নিশ্চয়তা থাকবে সবার। আর ঐ বাংলাদেশই চাই আমি এবং আমরা সবাই।

ফজলে এলাহী ফুয়াদ
শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর