মাদ্রাসায় শিশু ধর্ষণ, আলেমরা ভাস্কর্য নিয়ে ব্যস্ত: তসলিমা নাসরিন

বাংলাদেশে মাদ্রাসা মসজিদে নানা অপরাধ বাড়ছে। শিশু ধর্ষণ চলছে। মাদক ব্যবসা বাড়ছে। কিন্তু এসবের বিরুদ্ধে আন্দোলন না করে ইসলামী দলগুলো ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙেছে, সেদিন কুষ্টিয়ায় বাঘা যতীনের ভাস্কর্যের ওপর হামলা করেছে। জিহাদিদের কাজ ভাস্কর্য মূর্তি মাজার ইত্যাদি ভেঙে ফেলা। সন্ত্রাসী দল আইসিস ইরাকে আর সিরিয়ায় এভাবেই হাতুড়ি শাবল নিয়ে ভেঙে ফেলেছিল প্রাচীন সব কীর্তিস্তম্ভ, স্মৃতিলিপি।

বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে নিজের মূর্তি ভাঙা নীতি মানা মুসলমান পরিচয়খানি দিলে এদের আর বিশ্বের কোথাও স্থান হবে না, এমনকী পাকিস্তানেও নয়। ইরাকে সিরিয়াতেও নয়। একটি দেশেই তারা নিজের ধ্বংসাত্মক জিহাদি কার্যকলাপের কথা চিৎকার করে জানিয়ে দিতে পারে, কী ভাঙবে, কী পোড়াবে, কাকে খুন করবে, কাকে জবাই করবে, তাও ঘোষণা করে দিতে পারে, কিন্তু কোনও শাস্তি হয় না, বরং অনুরাগী ভক্তের সংখ্যা বাড়ে, সে বাংলাদেশ।

রাজনীতিকদের মধ্যে যাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত তাঁরা ধর্মের ধ্বজা তুলে সাধু সেজেছেন। আর তাঁদের ওই ধ্বজার তলায় জন্মেছে লাখ লাখ জিহাদি। রাজনীতিকরা দেখেও না দেখার ভান করেছেন। এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের কোনও চরিত্র নেই বলে তাঁরাও দেশ ও দশের চিন্তা বাদ দিয়ে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। এমন চমৎকার জিহাদোপোযুক্ত ভূমি আর দুনিয়ার কোথায় মিলবে!

মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো ইসলামী জিহাদি দলকে নিষিদ্ধ করে বুঝিয়ে দিয়েছে তাদের নিষিদ্ধ করা যায়। মুসলিম দেশ হলেই সব ইসলামী দলকে বৈধতা দিতেই হবে তা ঠিক নয়। সৌদি আরবের মতো প্রভাবশালী দেশ যদি মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো দলকে নিষিদ্ধ করতে পাবে, তাহলে বাংলাদেশ কেন পারবে না জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করতে, কেন পারবে না হেফাজতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করতে? চাইলেই পারে। কিন্তু মুশকিল হল চাইছে না।

জামায়াতে ইসলামী আর হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যত ক্ষতি করেছে, তত ক্ষতি আমি নিশ্চিত মুসলিম ব্রাদারহুড করেনি মধ্যপ্রাচ্যে। সৌদি আরব ইমাম এবং ইসলাম প্রচারকদেরও চাকরি খেয়েছে। বাংলাদেশ তো জিহাদি আদর্শে যুবসমাজকে বিপথে নিচ্ছে জেনেও কোনও ইমাম বা কোনও ইসলাম প্রচারক হুজুরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না! তাই বলি, সৌদি আরবের কাছ থেকেও অনেক কিছু শেখার আছে বাংলাদেশের।
লেখক: নির্বাসিত লেখিকা। সূত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন।

বার্তাবাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর