আ’লীগ নেতার বাড়িতে হামলা, পিস্তলসহ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

বগুড়ার আদমদীঘিতে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিরোধে পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে স্ত্রীসহ তাকে মারপিট, লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকায় বুধবার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মশিউর রহমান সজল ও সান্তাহার কলেজ শাখার নেতা একরামুল হক শুভকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সজলের বাড়ি থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সান্তাহার মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনায় পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেছে।

মামলায় তারা দুজন ছাড়াও নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান পিন্টুকে প্রধান করে ১২ জনের নামে ও অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছেন মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী।

বুধবার বিকালে গ্রেফতারকৃত দুজনকে আদালতে হাজির করে ৫ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত শুধু সজলকে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস জানান, সজল তাদের সংগঠনের কর্মী, তবে তিনি শুভকে চিনতে পারেননি।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গত বছর আদমদীঘি উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মারুফ হাসান রবিন ও একই এলাকার মহসিন আলী মণ্ডলের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মশিউর রহমান সজল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সজল সভাপতি হলে রবিনের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

রবিনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী ১৮ মার্চ আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। বিজয়ী ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান পিন্টুর পক্ষে কাজ করা কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সান্তাহার রেলগেট চত্বরে রবিনকে কটূক্তি করেন।

এ নিয়ে প্রথমে দুপক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। কিছুক্ষণ পর রবিন পোস্ট অফিস মোড়ে সজল গ্রুপের শাকিল হোসেন নামে ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে আহত করেন।

এর জের ধরে রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মশিউর রহমান সজলের নেতৃত্বে একই এলাকার এজাজুল হকের ছেলে সান্তাহার কলেজ ছাত্রলীগের নেতা শুভসহ ২০-২২ নেতাকর্মী রবিনদের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা রবিনকে না পেয়ে তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী ও মা মুন্নি বেগমকে মারপিট, বাড়িতে ভাঙচুর, নগদ দুই লক্ষাধিক টাকা, স্বর্ণের গয়না লুট করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় আহত আনসার আলী আদমদীঘি থানায় নবনির্বাচিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান পিন্টু, ছাত্রলীগ নেতা মশিউর রহমান সজল ও একরামুল হক শুভসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। রাতেই আদমদীঘি সার্কেলের সিনিয়র এএসপি আলমগীর রহমান অভিযান চালিয়ে মশিউর রহমান সজল ও একরামুল হক শুভকে গ্রেফতার করেন।

পরে শুভর দেয়া তথ্যে পুলিশ রাত সাড়ে ১০টার দিকে সজলের বাড়িতে তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করে। পুলিশ বুধবার দুপুরে থানায় সজল ও শুভর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করেছে।

আদমদীঘি থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, দুই মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা সজল ও শুভকে বুধবার বিকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক জানান, বিচারক শহিদুল ইসলাম শুনানি শেষে শুধু সজলকে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। পরে শুভকে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর