ঘাটাইলে কর্মসৃজন প্রকল্প শুরু না করতেই কাজের মেয়াদ শেষ

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নে কর্মসৃজন (৪০ দিনের কর্মসূচি) প্রকল্পের পুরো টাকাই ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

২০১৯-২০ অর্থ বছরে ফেরত গেছে প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর আগের অর্থ বছর ফেরত গেছে ৭৫ লাখ টাকা। আর ২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রথম ধাপে ১৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে একটি ইউনিয়ন প্রকল্পই জমা দেয়নি। চলতি বছর অক্টোবরে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, শুরুর আগেই মেয়াদ শেষ। অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় শ্রমিক নিয়োগ করে প্রান্তিক এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কার করার প্রকল্প এটি।

প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৪ টি ইউনিয়নে প্রায় ৬৮ টি প্রকল্পের জন্য ২ হাজার ৯১৩ জন শ্রমিকের বিপরীতে ওয়েজ কস্ট এবং ননওয়েজ কস্ট মিলিয়ে ২০২০-২১ অর্থ বছরে বরাদ্দ পাওয়া গেছে প্রায় ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ১৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৩ টি ইউনিয়ন ৬৩ টি প্রকল্প দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কাগজপত্র জমা দেন। কিন্তু দিঘলকান্দি ইউনিয়ন কোনো প্রকল্প জামা দেয়নি। প্রথম পর্যায় অক্টোবর মাসে কাজ শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩০ নভেম্বর। যে ১৩ টি ইউনিয়ন প্রকল্প জমা দিয়েছে তারাও কোনো কাজ করতে পারেনি, এর আগেই কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আবার কয়েকটি ইউনিয়ন প্রকল্প জমা দিয়েছে কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার অল্প কিছুদিন আগে।

এদিকে চলতি বছর দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় উপজেলাার অনেক কাঁচা রাস্তার ব্যপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। গ্রামীণ প্রায় ৬০ কি.মি. রাস্তা ভেঙ্গে গেছে বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস জানায়। ওই সকল রাস্তা সংস্কারের কাজ কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকায় করার কথা ছিল।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবশ্যই কাজ সম্পন্ন করতে হবে। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করে চুড়ান্ত প্রতিবেদন না দেওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের বরাদ্দ দেওয়া হবে না। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (কাবিখা-৩) মো.আবুল কালাম আজাদ সাক্ষরিত পত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

দিঘলকান্দি ইউপি সদস্য ছালামত হোসেন খান বলেন, বন্যায় রাস্তা ভেঙ্গে গেছে, মেরামত না করা হলে জনগনের ভোগান্তির সীমা থাকবেনা।

ধলাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান এজহারুল ইসলাম বলেন, উপজেলা থেকে কাজ করার কোনো অনুমতি পাইনি। কবে শুরু আর কবে শেষ তাও জানিনা।

দিঘলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.নজরুল ইসলাম বলেন, অনেকেই প্রকল্প জমা দেয়নি। আর দেড়শত টাকায় শ্রমিক পাওয়া না যাওয়া এবং অন্যান্য সমস্যার কারণে প্রকল্প জমা দিতে পারিনি। তবে দু’একদিনের মধ্যে জমা দিয়ে দেব।

এ বিষয়ে জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) এনামুল হক বলেন, সঠিক সময়ে ইউনিয়ন কমিটি প্রকল্প জমা না দেওয়ায় কাজ শুরু করতে পারিনি। সময় বৃদ্ধির জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্পের সভাপতি অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, করোনা ও বন্যার পানি নামাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেই নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হবে।

বার্তাবাজার/এ.এম.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর