অলৌকিক ক্ষমতায় মামলার প্রধান আসামীকে অব্যাহতি ‍দিয়ে চার্জশিট

বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইছাগুড়া রাজগর এলাকার দলিল লেখক রেজাউল করিম রিয়াজ হত্যার প্রধান অভিযুক্তকে বাদ দিয়ে চার্জশিট প্রদান করেছে পুলিশ।

সোমবার (৩০ নভেম্বর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) সগির হোসেন দীর্ঘ নয়মাস তদন্ত শেষে এই চার্জশিট প্রদান করেন। মামলায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন রিয়াজের স্ত্রী লিজা আক্তার। এমনকি তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও প্রদান করেন। এতকিচুর পর কাউনিয়া ওসির এমন চার্জশীট অবাক করেছে নিহতের পরিবারকে।

মামলার বাদী নিহত রিয়াজের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম রিপন বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আমাদের হত্যা মামলাটি তদন্তের নামে তদন্তকারী কর্মকর্তা সগির হোসেন বিভিন্নভাবে কালক্ষেপণ ও প্রধান আসামী লিজাকে রক্ষা করার মিশনে নামার বিষয়টি টের পেয়ে গত ২৩ই অক্টোবর অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই রহস্যজনক মামলা তদন্তের প্রতি আমার আইনজীবীর মাধ্যমে না রাজি দিয়ে মামলাটি সিআইডি পুলিশ সদস্যদের দিয়ে তদন্তের দাবী করা হয়। সেসময় উক্ত আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ মারুফ আহমেদ বাদীর আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী মামলার তারিখ ১১ই নভেম্বর মামলার সকল সিডি নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ সগির হোসেনকে স্ব-শরিরে আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেন। ১১ই নভেম্বরে মামলার ধার্য তারিখে তদন্তকারী কর্মকর্তা সগির হোসেন করোনাকে পুজি করে আদালতে আসা থেকে বিরত ছিলেন। ওই আদালতের বিচারকের বদলির কথা শুনে তিনি সোমবার আদালতে প্রধান আসামী আমিনা আক্তর লিজাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে চার্জশিট দাখিল করেন। আমরা আগেও এই মামলা তদ্বন্তে পক্ষপাতিত্তের প্রমান পেয়েছি। যে সন্দেহ করেছি, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সেই কাজই করেছেন। এই তদন্ত প্রতিবেদন আমরা মানি না।

এব্যাপারে কাউনিয়া থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ সগির হোসেন বলেন, এই মামলার তদন্তকালে স্বামী রিয়াজ হত্যার সাথে জড়িত এ রকম কোন প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দিয়ে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছি।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নিজ বসত ঘরে স্বামী রিয়াজ খুন হন। ওই ঘরে তার সাথে তার স্ত্রী লিজা ছিলেন। হত্যা জড়িত থাকার সন্দেহে রিয়াজের স্ত্রী আমিনা আক্তার লিজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে আসা হয় এবং পরবর্তীতে স্বামী হত্যায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেফতারের পর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় লিজা। যদিও পরে তা প্রত্যাহারের আবেদন করেন জামিনে বের হয়ে লিজা। এদিকে মামলার বাদী দাবী করেন, কোতয়ালী থানা পুলিশ হত্যা মামলা রহস্য উদঘাটন করার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছার আগ মুহুর্তে হঠাৎ করে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। সেসময় ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিমের তত্ববিধানে ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী সগির হোসেন হত্যা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব গ্রহন করেন।

বার্তা বাজার/এম.এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর