প্রজ্ঞাপন না মেনে নিয়োগ হচ্ছে দলীয় নেতা-কর্মী

সাংসদ প্রত্যাশীদের খুশি রাখার জন্য নিয়োগ করা হচ্ছে পরিচালক হিসেবে

সরকারি ব্যাংকগুলোতে আবারও শুরু হয়েছে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া। নির্বাচনে মনোনয়ন না দিলেও প্রার্থীদের সন্তুষ্ট রাখার জন্য দেয়া হচ্ছে ব্যাংকের পরিচালক পদ। সরকারী ব্যাংকের পরিচালক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব প্রজ্ঞাপন থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

এবছরের ২২ মার্চ রাষ্ট্রমালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা উপকমিটির সহ-সম্পাদক রাজীব পারভেজকে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ সরকার। পরিচালক পদে নিয়োগ দেয়ার সময় ‘গভর্ন্যান্স পলিসি এক্সপ্লোর সেন্টার’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হিসেবে তাঁর পরিচয় দেওয়া হয়। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, রাজীব পারভেজ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-১ আসন থেকে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন কিন্তু দল তাঁকে মনোনয়ন দেয়নি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগ দিয়ে থাকে। ২০০৯ সালে আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর ব্যাংকগুলোতে দলীয় বিবেচনায় পরিচালক নিয়োগের পর ব্যাংক খাতে নানান কেলেঙ্কারির হয়, তবে ২০১৪ সালে তিনি পুনরায় অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর নিয়োগ করেন সাবেক আমলা ও ব্যাংকারদের।

আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী পদ থেকে অবসর নেয়ার পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্ব নেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। আবারও শুরু হয় দলীয় বিবেচনায় লোক নিয়োগ দেওয়া।

জানা যায়, বহু দলীয় কর্মীর জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়া আছে বিভাগটিতে। পরিচালক হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংঘটনগুলোর বর্তমান ও সাবেক নেতা-কর্মীরা করছেন তদবির।

বর্তমানে নিয়োগের ক্ষেত্রে নেই পরিচালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। ঘুষ, তদবির-বাণিজ্যের প্রমাণ পেলেও দেয়া হচ্ছেনা কোন শাস্তি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাস্তি দেবার বিধান না থাকায় তারা নিরব ভূমিকা পালন করছে।

সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে পরিচালনা পর্ষদে ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নিয়োগ দেয় দলীয় লোক। এই সময়ে ব্যাংক খাতে হল-মার্ক, বেসিক ব্যাংক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, অ্যাননটেক্স, ক্রিসেন্ট গ্রুপসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারির জন্ম হয়।

আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সহ-সম্পাদক কে এম এন মনজুরুল হক-কে ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে দলীয়ভাবে অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই সময়েই জন্ম নেয় সোনালী ব্যাংকে ও হল-মার্ক কেলেঙ্কারি।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ বি এম রুহুল আজাদ বলেন, বর্তমানে ব্যয় সাশ্রয়ের জন্যই পরিচালক পদে দলীয় নিয়োগ হচ্ছে। তবে কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক তা দূর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অবহিত করতে পারে।

বার্তাবাজার/এম.এ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর