৫ সংসার শেষ ১ জোড়া নূপুরে

৫ সংসার শেষ ১ জোড়া নূপুরে

১ জোড়া নূপুর বাংলার সিনেমার কাহিনীকেও হার মানালো। বন্ধকী নূপুর ছাড়াতে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে প্রথমে অটোরিকশা ভাড়া, এরপর অটোচালককে হত্যা। ঘটনাটি এখানেই শেষ নেয়। হত্যাকান্ডের মতো অপরাধ ঢাকতে কতই না ছলচাতুরি। তবে ঘাতকদের শেষ রক্ষা হয়নি । তারা এখন শ্রীঘরে। ৫টি সংসার তছনছ হয়ে গেল মাত্র কয়েক হাজার টাকার নুপূরের জন্য।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) এলাকার আমবাগান এলাকায় ২৫ নভেম্বর রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুলাল মিয়া নগরীর মাসকান্দা এলাকার বাসিন্দা। মূলত অটোরিকশার জন্যই তাকে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় ২৬ নভেম্বর রাতে নিহতের স্ত্রী জহুরা খাতুন অজ্ঞাতদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন । মামলার পরদিন রাতে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন আলমগীর হোসেন, লিটন মিয়া, বাতেন মিয়া ও শুক্কর আলী। তারা সবাই ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ফারুক হোসেন জানান, আলমগীর ও বাতেন ২৮ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন । জবানবন্দিতে তারা অটোচালক দুলাল মিয়াকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয় আদালতের নির্দেশে। তবে গ্রেফতার লিটন মিয়া ও শুক্কুর আলী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করায় তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তিনি আরো বলেন, আলমগীর ও বাতেন দুই বন্ধু। তারা একসঙ্গে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ ও নেশা করতেন। নেশার টাকার জন্যই স্ত্রীর পায়ের নূপুর সাত হাজার টাকায় বন্ধক দেন আলমগীর। পরে তিনি বন্ধক ছাড়াতে পারেননি। স্ত্রীর নূপুর বন্ধক থেকে ছাড়াতেই আলমগীর ও বাতেন অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাত আটটার দিকে মাসকান্দা থেকে যাত্রীবেশে কয়েকজন দুলালকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আমবাগান এলাকায় ভাড়ায় নিয়ে যান।

আমবাগান এলাকায় যাওয়া মাত্রই নিজের কাছে থাকা চিকন রশি দিয়ে দুলালের গলায় পেঁচিয়ে ধরেন বাতেন। এ সময় আলমগীরের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে দুলালের পিঠে আঘাত করেন এবং অটো থেকে তাকে ফেলে দেন। পরে তারা অটোরিকশাটি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমবাগান এলাকার বাসিন্দারা দুলাল মিয়াকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আলমগীর ও বাতেনের স্বীকারোক্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রশি, ছুরি ও ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

বার্তাবাজার/এম,এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর