সলিমগঞ্জে ইজারাদারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ বাজারে ইজারাদার কর্তৃক অতিরিক্ত হারে খাজনা (টোল) আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সলিমগঞ্জ বাজারটি ওই এলাকার মধ্যে একটি বৃহৎ হাট।

প্রতি শনিবার হাটবারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতা-বিক্রেতার আগমন ঘটলেও প্রভাবশালী ইজারাদার কর্তৃক অতিরিক্ত হারে (খাজনা) টোল আদায়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

সাধারণ কৃষক ও জনসাধারণ কৃষিপণ্য বিক্রি করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন। এদিকে অতিরিক্ত খাজনা দিতে গিয়ে তাঁদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ হারে খাজনা আদায় অব্যাহত থাকলে আগামী ১/২ বছরের মধ্যেই বাজারটির সুনাম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপরদিকে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারানোর শঙ্কাও বিদ্যমান। এব্যাপারে বিভিন্ন দপ্তরের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বললেন ব্যবসায়ীরা।

ছবি: বার্তা বাজার।

প্রভাবশালী ইজারাদাররা (খাজনা আদায়কারী) সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর সকল স্তরের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত খাজনা থেকে কয়েক গুণ বেশি খাজনা আদায় করছেন। তাদের হাত থেকে কলা-কচু ব্যবসায়ীরাও রেহাই পাচ্ছে না। ইজারাদারদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এ সকল অভিযোগ তুলে ধরে ব্যবসায়ীরা।

অভিযোগ আছে ঐতিহ্যবাহী সলিমগঞ্জ বাজারের পাবলিক টয়লেট সামনে ও রাজনগর গ্রামের সড়কে উপর ইজারাদার কর্তৃক অবৈধভাবে সবজির দোকান বসিয়ে প্রতিদিন খাজনা আদায় করছে। প্রতিদিন একটি শুটকি ব্যবসায়ীকে চট প্রতি তাকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে খাজনা দিতে হয়। সবজি ব্যবসায়ীদের এক চটে বসলে ৬০থেকে ৮০টাকা করে দিতে হয়। আর একাধিক চট বসালে আরও বেশি খাজনা দিতে হয়। মাছ ব্যবসায়ীদের একটি কড়াই হিসেব করে ১০০ টাকারও বেশি খাজনা দিতে হয়।

এছাড়াও সপ্তাহে ১ দিন শনিবার হাট বসে। এই হাটে লক্ষাধিক নারী-পুরুষ তাদের চাহিদানুযায়ী বিভিন্ন পণ্য কেনা কাটা করে থাকেন। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে শত শত বিক্রেতা বাজারের নির্ধারিত জায়গায় বসে।
সরেজমিনে হাট বাজার ঘুরে জানা গেছে, বাচ্চাদের গেঞ্জি পেন্ট ও সবজি বাজারের ছোট-বড় বিক্রেতারা জানান, রশিদ ছাড়াই হাটে ইজারাদার ৫০ থেকে ২০০ টাকা করে খাজনা আদায় করে থাকে। পাশাপাশি নিয়োগকৃত সুইপারদের ১০থেকে ২০ টাকা দিতে হয়।

জানাযায় প্রভাবশালী ইজারাদাররা সবজি চাষি ও কৃষকদের রক্ত চুষে নিতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা মানুষকে ফাঁকি দিতে বাজারে খাজনা আদায়ের কোন রেট চার্ট টানায়নি। মানুষজন বাজারের পাশে বাড়িতে বসে মালামাল বিক্রি করলেও ইজারাদারের সন্ত্রাসী বাহিনী দানবের মত সেখানে গিয়ে হাজির হয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে আসে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনে দিনে সলিমগঞ্জ বাজারের মানুষ ফুঁসে উঠছে। এই ইজারার নামে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে যে কোন সময় সাধারন মানুষ ও ইজারাদার বাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

বাজারের ফুটপাতের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সপ্তাহে শনিবার হাটের দিন ইজারা নেওয়ার কথা থাকলেও ফুটপাতের দোকানদারদের কাছ থেকে প্রতিদিন ইজারার টাকা আদায় করা হয়। এ সকল ব্যবসায়ীরা ইজারাদার কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল এমপি’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সলিমগঞ্জ বাজারের ইজারাদার(খাজনা আদায়কারী) শাহাআলম মেম্বার ইজারার নামে চাঁদাবাজি করার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, সরকারি নিয়ম মেনেই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইজারার টাকা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেও তিনি দাবি করেন।

উপজেলা নবাগত নির্বাহী অফিসার মোঃ একরামুল ছিদ্দিক জানান, বিষয়টি আমরা দেখবো সরজমিন গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বার্তাবাজার/অমি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর