রাঙ্গাবালীতে মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে সাফল্যের পথে সোহেল

রাঙ্গাবালীতে প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের লক্ষে অসময়ে মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ! সাফল্যের পথে সোহেল মাহমুদ

সাগর কন্যা খ্যাত পটুয়াখালী জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ রাঙ্গাবালীতে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ, প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের লক্ষ্যে ইউটিউব দেখে বিনা মৌসুমে তরমুজ চাষ করে সাফল্যের পথে সোহেল মাহমুদ নামের এক কলেজ ছাত্র।

সমতল ভূমি থেকে খানিকটা উপরে মাচা তৈরি করে চাষ করা হয় অন্য মৌসুমের ফসল তরমুজ। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে তরমুজ চাষ খুবই কষ্টকর। তবে মাচা পদ্ধতির এই চাষ বর্ষা মৌসুমেও বেশ সহনশীল। এতে সার প্রয়োগও মৌসুমী ফসলের তুলনায় অনেক কম।

এমনি চাষ পদ্ধতি দেখা গেছে রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায়। বরিশাল বি এম কলেজের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র উদ্যোক্তা সোহেল মাহমুদের মাধ্যমে এই প্রথম মাচা পদ্ধতির চাষ দেখতে পেল রাঙ্গাবালীর মানুষ।

জানা যায়, কৃষক পরিবারের সন্তান সোহেল মাহমুদ। তবে কৃষি কাজের অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। এই প্রথমবারের মতো কৃষি কাজে নিয়োজিত হয়েছেন তিনি। তাও আবার ভিন্ন মাত্রায়।

উদ্যোক্তা সোহেল মাহমুদ জানান, এটা সর্বপ্রথম আমি ইউটিউব দেখে শুরু করি। সেখানে বিনা মৌসুমে তরমুজ চাষের বিভিন্ন ভিডিও দেখতে পাই এবং সেখান থেকে এই উদ্যোগ। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে এই করোনা কালীন সময়ে বাংলাদেশের কোথাও এক ইঞ্চি জমিও যেন ফাঁকা না থাকে। সেই অনুযায়ী আমি এই প্রজেক্টটি করেছি।

তিনি আরও জানান, প্রথমে বীজ রোপণ করি। রোপণ করার ২৫ থেকে ৩০ দিনের ভেতরেই এর ফুল ফল আসতে শুরু করে। এরপর ফল একটু বড় হলেই মাচা তৈরি করে দিতে হয়। মৌসুমে তরমুজ চাষে বৃষ্টি হলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিন্তু মাচা পদ্ধতির চাষে এই আশঙ্কা খুবই কম এবং এটি একটি বৃষ্টি সহনশীল জাত। বাজারদর ভালো হলে ইনশাআল্লাহ অবশ্যই লাভবান হতে পারবো। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি মেসেজ, যদি তারা সঠিক ভাবে এ কাজ করতে পারে তাহলে অনেক লাভবান হতে পারবে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে নিজ মালিকানাধীন ১০ শতাংশ জমিতে এই তরমুজ চাষ করেন সোহেল মাহমুদ। গত সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে এই প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি‌।

প্রজেক্ট ঘুরে দেখা যায়, মাচার উপরেই সবুজ লতায় মোরানো তরমুজ গাছ। মাচার নিচের দিকে ঝুলে রয়েছে তরমুজ। প্রত্যেকটি তরমুজ ওজনে প্রায় ৩-৪ কেজি। যা এখন বিক্রির জন্য উপযুক্ত।

এব্যাপারে রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, রাঙ্গাবালীতে এই প্রথমবারের মতো বারো মাসের তরমুজ আবাদ করা হয়। এই আবাদটি করেছেন সোহেল মাহমুদ নামের এক কলেজ ছাত্র। এই করোনা কালীন সময়ে তার অলস সময়টুকু কাজে লাগানোর জন্য তিনি এই আবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে নির্দেশ’ প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদ’ এর আওতায় আনতে হবে। সেই মোতাবেক তিনি কাজ করেছেন। আমাদের কৃষি অফিসের সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী তিনি এই কাজ করেছেন।

আমাদের জানা মতে তার ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং ঠিকভাবে বিক্রি করতে পারলে প্রায় ৫ গুনন লাভ করতে পারবে বলে আশা করি।

তিনি আরও বলেন, এভাবে তরুণ উদ্যোক্তারা যদি কৃষি ক্ষেত্রে এগিয়ে আসে তাহলে আমাদের কৃষি সেই গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে বানিজ্যিক কৃষিতে রূপ নিতে পারবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর