রাষ্ট্র তুমি সংবিধান নামের চুক্তিনামা রক্ষা করছ কি: পীর হাবিব
হে রাষ্ট্র! যে জনগণকে সংবিধানে ক্ষমতার মালিক করা হয়েছে সেই জনগণের হাতে কি তোমার মালিকানা অর্পিত হয়েছে? গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ও সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান কি স্বাধীন শক্তিশালী রূপ নিয়েছে? সমাজে বৈষম্য বেড়েছে না শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আকাশছোঁয়া একটি ভাস্কর্য তাঁর ও জাতির বীরত্বের স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনেক আগেই হওয়াটা স্বাভাবিক ছিল।
আরবে মুসলিম দেশে দেশে এমনকি পৃথিবীর শীর্ষে থাকা মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ায় ভাস্কর্য রয়েছে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য যখন ধর্ম ব্যবসায়ীরা ভেঙে ফেলার হুমকি দেয় তখন রাষ্ট্র নীরব হয়ে বসে থাকে কী করে? ইসলামী রাষ্ট্র ও তাদের ইসলামী বিপ্লবের নায়ক আয়াতুল্লাহ খোমেনির ভাস্কর্য যেখানে শোভা পাচ্ছে সেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে এ ধরনের হুঙ্কার যারা দিচ্ছে উগ্র হঠকারী সাম্প্রদায়িক উসকানি দিচ্ছে ভাস্কর্যকে মূর্তি বলে, তাদের বিরুদ্ধে আইন কেন নীরব হয়ে বসে থাকে?
হে রাষ্ট্র! তোমার জন্মের নেপথ্যে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের লাখো লাখো শহীদের রক্ত ও মা-বোনের সম্ভ্রমহানির যে বেদনা জাতির হৃদয়ে হাজার বছর ধরে ক্রন্দন করবে, তারা এসব দেখার জন্য জীবনদান করেননি। এটা বরদাশত করা যায় না। করোনা মহামারীতে সবার জন্য সভা-সমাবেশের বিধিনিষেধ থাকলেও এদের এ উগ্রমূর্তি নিয়ে পরিস্থিতি অশান্ত করার সুযোগ কেন দেওয়া হচ্ছে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারসাম্যের রাজনীতি করছেন। কওমি শিক্ষার জন্য অনেক ইতিবাচক কাজ করেছেন। তাঁর আমলেই আলেম-ওলামারা সর্বোচ্চ হজে গেছেন। আলেম-ওলামাদের আমরাও সম্মান করি। কিন্তু রাজনৈতিক মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পাকিস্তানি আইএসআইর প্রেসক্রিপশনে যারা সাঈদীর মুক্তি থেকে জনমত গড়তে ওয়াজ করেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে বাধা দেন তা গ্রহণ করি না।
বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ, গ্রেনেড বোমা ১০ ট্রাক অস্ত্র উলফাকে সহযোগিতা ও একুশের ভয়াবহ হামলা নিয়ে বিস্তর লিখেছি। পরিণতিতে জঘন্য গুজব ছড়িয়ে আমার বাস করা অ্যাপার্টমেন্টে সঙ্ঘবদ্ধ শক্তি ভয়াবহ আক্রমণ ও তান্ডব চালিয়েছে। এসব পরোয়া করে সাংবাদিকতায় আসিনি। যেমন ’৭৫-এর পর জীবনের মায়া নিয়ে বড় দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির মিছিলে নামতে পরোয়া করিনি। আজ গোটা দেশ আওয়ামী লীগ হয়ে যেতে পারে, ক্ষমতার লোভ-মোহে দেশের চেনা দুর্নীতিবাজ অর্থ পাচারকারীদের ঘুষখোর তদবিরবাজদের ব্যাংক হিসাব চাওয়া হয়নি। আপাদমস্তক মর্যাদার সঙ্গে সাংবাদিকতা করা আমার অ্যাকাউন্ট তল্লাশি করা হয়েছে গোটা দেশের ব্যাংকগুলোতে। বলেছিলাম, ব্যাংক হিসাব জনগণের সামনে উন্মোচন করে দিন। কিন্তু সব ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যাংক ও সম্পদের হিসাব বের করুন।
সূত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন।
লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।
বার্তাবাজার/এসজে