৪’শ বছরের পুরনো বটগাছে মৌমাছির মিলন মেলা

ভারত সীমান্ত ঘেঁষা শেরপুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ের গজনী অবকাশকেন্দ্রের ৪’শ বছরের পুরনো এক বটগাছে মৌমাছির দল ৭২টি চাক বেঁধেছে।

একসঙ্গে এতগুলো মৌচাক দেখার জন্য এখন প্রতিদিনই গজনী অবকাশকেন্দ্রে ভিড় করছে উৎসুক মানুষ। আর ভ্রমণপিপাসুরা তো আছেনই।

গজনী অবকাশকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, অবকাশকেন্দ্রের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে বটগাছটি। গাছটির গোড়া থেকে শুরু করে মগডাল পর্যন্ত চাক বেঁধে নির্বিঘ্নে বাস করছে মৌমাছির দল। মৌমাছির গুঞ্জনে পুরো এলাকা মুখরিত। দর্শনার্থীরা গজনী অবকাশে বেড়াতে এসে ওই বটগাছের কাছে কিছুক্ষণের জন্য হলেও থমকে দাঁড়াচ্ছেন।

ছবি-বার্তাবাজার

বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ হতে আসা দর্শনার্থী শামছুন্নাহার সোমা বলেন, ‘ গজনী অবকাশে বেড়াতে এসে দেখলাম একটি বটগাছে ৭২-৭৩টি মৌচাক। একটি গাছে এতগুলো চাক হতে পারে, তা কখনো ভাবতে পারিনি। এই প্রথম দেখলাম।’

শেরপুর পৌর এলাকার আখের মামুদ বাজারের বাসিন্দা আরিফুর রহমান আকিব বলেন, এমন দৃশ্য প্রকৃতির এক বিশেষ খেয়াল। কেউ যাতে মৌমাছিগুলোকে বিরক্ত করে না।

গজনী অবকাশকেন্দ্রের কাপড় ব্যবসাী আকরাম বলেন, ‘মৌচাকগুলোতে কোনো ঢিলাঢিলি নাই। সে জন্য মৌমাছিরা নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারছে। এটি দর্শনার্থীদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়।’

ছবি-বার্তাবাজার

মৌচাষি আব্দুল হালিম মিয়া বলেন, অবকাশকেন্দ্রের বটগাছে মৌচাক করা মৌমাছিগুলো ডাচ জাতের বন মৌমাছি। এরা সংঘবদ্ধভাবে এক জায়গায় থাকতে ভালোবাসে। এ ছাড়া গারো পাহাড়সংলগ্ন বনে এখন প্রচুর ফুল রয়েছে। এসব ফুল থেকে মধু আহরণের সহজ উৎস হওয়ায় মৌমাছিগুলো প্রাচীন এ বটগাছটিতে বাসা বেঁধেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা তসর আলী জানান, কবে এ বটগাছটি এখানে উঠেছিল, তা কারোরই জানা নেই। আমাদের সবাই ধারণা, এ গাছের বয়স ৪০০ বছরের বেশি হবে।

স্থানীয়রা আরও জানান, এই বট গাছটি মৌমাছিদের পছন্দ অনেক আগে থেকেই। আগে শত শত মৌচাক থাকত। কিন্তু এখন ডাল ভেঙে যাওয়ায় মৌচাক কমে গেছে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে পর্যটন কেন্দ্রে মানুষজনের তেমন চলাফেরা, শব্দ দূষণ না থাকায় মৌচাকের সংখ্যা এবার বেড়ে গেছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, একটি গাছে এতগুলো মৌচাক সচরাচর দেখা যায় না। বটগাছটিতে ৭০ থেকে ৭৫টি মৌচাক রয়েছে। এসব মৌচাক থেকে কেউ যেন মধু আহরণ এবং মৌমাছিদের বিরক্ত না করে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব মৌচাক ভ্রমণপিপাসুদের কাছে গজনী অবকাশকেন্দ্রের আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর