শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানকে ঘিরে চার স্তরের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা

শাহরিয়া হৃদয়, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার ঈদুল ফিতরের জামাতকে নির্বিঘ্নে করতে চার স্তরের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

২০১৬ সালের জঙ্গি হামলার অভিজ্ঞতা আর দেশ-বিদেশের সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনা গুলোকে মাথায় রেখে ঢেলে সাজানো হচ্ছে ঈদগাহ মাঠ ও মাঠের আশপাশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অপরদিকে, যাতায়াতে ট্রেন সুবিধার পাশাপাশি মুসল্লিদের সকল ধরণের সেবা নিশ্চিতের ব্যবস্থা নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। কিশোরগঞ্জ শহরের উপকন্ঠে নরসুন্দা নদী তীরে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯২তম ঈদুল ফিতরের জামাত।

আর এ জামাতকে নির্বিঘ্নে এবং মুসল্লি বান্ধব করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই এ ঈদগাহ ময়দান তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। চলছে, নিরাপত্তা চৌকি, ওয়াচওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, দেয়াল-স্থাপনা এবং গাছ-গাছালিতে রঙ ও চুন দিয়ে সাজানোর কাজ। একই সঙ্গে চলছে চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঈদগাহস্থল পর্যবেক্ষণ, পরিদর্শণ ও মহড়া ইত্যাদি কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানকে ১৯২তম ঈদুল ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুত করার কার্যক্রম পরিদর্শণকালে সামগ্রিক নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হন।

তিনি জানান, এবার ঈদগাহ ময়দান, আশপাশ এলাকা এমনকি শহরজুড়ে চারস্তরের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেস্টনী গড়ে তোলা হবে। এ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ১২০০ পুলিশ, ৫ প্লাটুন বিজিবি, ১০০ র‌্যাবসহ গোয়েন্দ সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকবে। আর্থওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা, মেটেল ডিডেক্টর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে ব্যবহার করা হবে ড্রোন ক্যামেরা। এছাড়া, বোম ডিসপোজাল টিম, সুইপিং টিম থাকবে। মাইন মেটাল ডিটেক্টর দ্বারা ঈদগাহ ময়দান সুইপিং করা হবে। আর এ নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক কর্মকান্ডে ২৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও অংশ নিবে। তবে, এবার ঈদগাহ এলাকায় জায়নামায ছাড়া অন্যকিছু বহন করা যাবে না বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মাশরুকুর।

অপরদিকে, এক সাক্ষাৎকারে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, ২০১৬ সালে শোলাকিয়া মাঠের জঙ্গি হামলার অভিজ্ঞতা আর সাম্প্রতিককালে দেশে-বিদেশে জঙ্গি হামলার বিষয়গুলোকে সামনে রেখে সরকারের নির্দেশনানুযায়ী গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ঠ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনকে নিয়ে ঈদুল ফিতরের জামাতকে নির্বিঘ্নে করার যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঈদগাহ জামাতকে মুসল্লিবান্ধব করতে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দু’টি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থার পাশাপাশি থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাসহ সকল ধরণের মুসল্লি সেবা নিশ্চিত করা হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর