আবারও ময়নাতদন্তের ভয়ে নারীর লাশ চুরির চেষ্টা

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে রহস্যজনকভাবে মারা যাওয়া নারীর আবারও ময়নাতদন্ত হতে পারে এই ভয়ে কবর খুড়ে লাশ চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে মৃতের পরিবারের দাবি, আলামত বিনষ্ট করার জন্যই লাশ চুরির চেষ্টা করা হয়। শুক্রবার রাতে উপজেলার বেনুপুর এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।

নিহত ওই নারী হলেন, উপজেলার আশাপুর এলাকার জসিম উদ্দিনের মেয়ে জুলেখা আক্তার শিখা (২৫)।

জানা যায়, ১০ বছর আগে পারিবারিকভাবে ঢাকার ধামরাইয়ের যাদবপুর থানার আতাউর মাস্টারের ছেলে মেহেদীর সাথে বিয়ে হয় শিখার। বিয়ের কিছুদিন পর পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এক পর্যায়ে শিখাকে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন তাড়িয়ে দিলে সে এসে আশ্রয় নেয় তার বাবার বাড়িতে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর স্বামী মেহেদী ও তার পরিবারের লোকজন এসে বুঝিয়ে শুনিয়ে আবারও নিয়ে যায় শিখাকে। এর ২ দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর শ্বশুরবাড়ি থেকে শিখার লাশ উদ্ধার করে ধামরাই থানার পুলিশ। ওইদিনই শিখার বাবা জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে স্বামী মেহেদী, শ্বশুর আতাউরসহ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ওই সময় পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের একাধিক চিহ্ন উল্লেখ করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ আশাপুর-বেনুপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেয়ে শিখার বাবা নারাজি দিয়ে ঢাকা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবারও ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করেন। যার প্রেক্ষিতে ৯ নভেম্বর গাজীপুরের একজন বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে শিখার লাশটি উত্তোলন করে ফের ময়নাতদন্তে প্রেরণের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নিদের্শ দেন আদালত।

কিন্তু এর আগেই শুক্রবার (২০ নভেম্বর) রাতে কে বা কারা কবর খুড়ে শিখার লাশ উত্তোলনের চেষ্টা করে। টের পেয়ে নিহতের পরিবার কবরস্থানে যাওয়ার আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। তবে সেখানে দুর্বৃত্তরা কোদালসহ কবর খোঁড়ার সরঞ্জাম রেখে যায়।

এ বিষয়ে শিখার বাবা জসিম উদ্দিন জানান, আমার মেয়েকে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলা চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সন্তোষজনক না হলে ফের ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করি। এরপর থেকে প্রতিরাতে আমরা কবরস্থানে পাহারা দেই। কিন্তু শুক্রবার কবরে যেতে একটু দেরী হলে মেহেদীর লোকজন লাশ চুরির চেষ্টা করে।

এ ব্যাপারে জানতে ধামরাই থানার ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, কবর খুড়ে লাশ চুরির চেষ্টার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

বার্তাবাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর