ঘরের খেয়ে বনের মোষ চড়াই: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতি- কাবেরী

বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানকে ইসলামিক সংবিধান আখ্যায়িত করে যারা সংবিধান ছুড়ে ফেলেছিলো তারা কি জানেন না ইসলামের নামে সন্ত্রাস মৌলবাদ দমনে এই রাষ্ট্র কতটুকু ভূমিকা রাখে! সেদিন যারা সংবিধান ছুঁড়ে ফেলতে দ্বিধাবোধ করেনি আজ তারাই সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে জঙ্গিপনা সৃষ্টির পায়তারা করছে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকেই এই দেশের জন্ম হয়েছে।

এই রাষ্ট্রযন্ত্র সংখ্যালঘু শ্রেনীকে অধিকতর নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রদান করে থাকে। সংখ্যালঘু নির্যাতন আমাদের অভ্যাস নয়, রাষ্ট্রকে বেকায়দায় ফেলতে এক শ্রেণীর উগ্রবাদী বা দেশদ্রোহীরা বিচ্ছিন্ন ভাবে এসব ঘটনা সংঘটিত করে। এদেশে সংখ্যালঘুর চেয়ে সংখ্যা গরিষ্টরা আরো তুলনামূলক অবহেলার শিকার। শিক্ষা, প্রগতি, রাজনীতিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্র নায়ক শেখহাসিনা সংখ্যালঘু শ্রেণীকে গুরুত্বসহকারে সমানুপাতিক ভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা এডভোকেট রানা দাশ গুপ্তের মতো সংখ্যালঘু নেতারা যদি সংখ্যালঘু নির্যাতন, সমানাধিকা ও বৈষম্য বলে দাবী তুলেন, তাহলে তারা কি ভাবে রাষ্ট্রীয় সম্মানী, প্রটোকলসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন সেটা প্রশ্ন থেকে যায়। আবার তারাই বর্তমানে ৪২৩ জনের অধিক হিন্দু ওসি বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করছেন বলে আত্মতুষ্টির কথা স্বীকার করেন।

এতোসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে অংশিদারিত্বের পরেও তাদের মুখে এসব কথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রিয়া সাহার মতো মিথ্যাচারের শামিল। এটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। লজ্জাজনক ভাবে আবার এসব নেতারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রদায়ের টানে খুনী প্রদীপের মতো অপরাধীদের সমাজে সমর্থনও করেন।

চরম সত্য কথা বলার অপরাধে আপনারা দল থেকে আমার বহিষ্কার চাইলেন। আপনাদের কথায় কি দলীয় প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা আমার মতো অস্প্রদায়িক চেতনার কর্মী হারাবেন! আমি তো ঘরের খেয়ে বনের মোষ চড়াই। আমার পূর্ব পুরুষ কিন্তু রাষ্ট্র প্রতিষ্টা লগ্ন থেকে সাংবিধানিক ভাবে এই দেশে ধর্ম নিরপেক্ষতা অসাম্প্রদায়িক নীতি প্রতিষ্টিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। আমাকে ত্যাগ করে আওয়ামীলীগ কি নিজ পায়ে কুড়াল মারার মতো আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নেবে? এদেশের সকল জাতী, বর্ণ, গোত্রের সাথে আমাদের জন্ম বেড়ে ওঠা। তাই সকল ধর্মের প্রতি অগাদ শ্রদ্ধা যেনো আজ আমার মনুষত্বের ধর্মে পরিনত হয়েছে।

এই পর্যন্ত আমি যতগুলো হিন্দু পরিবারকে ভূমিদস্যূর হাত থেকে রক্ষা করেছি, নিজেদের অবস্থান বা সাংগঠনিক দ্বায়বদ্ধতা থেকে আপনারা তাদের জন্য কি করেছিলেন? এতো কিছুর পরেও সেসব বিষয় তুলে কি আপনাদের আমি কখনো অমর্যাদা করেছি? আপনাদের স্বজনের ক্ষমতার দাপটে হত্যার শিকার হয়েছে মুসলমান। এটি দিবা লোকের মতো সর্ব্জন স্বীকৃত সত্য হলেও আমরা তো আর অপদার্থে মতো মূর্খ কথা বার্তা বলছিনা। আপনারা দায়িত্বশীল অবস্থা থেকে কেন এতো অনভিজ্ঞ কথা বলছেন সেটা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে, মানবাধিকারের মাথায় নুন রেখে একজন কট্টরপন্থী সাম্প্রদায়িক বিদ্ধেষী খুনী প্রদীপের টাকায় সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছেন। আপনারা যারা নিতান্ত সাধারণ সংখ্যালঘু জনগোষ্টি আছেন তারা কেন এসব চক্রান্ত বুঝতে পারেননা? আমরা আপনাদের সুখে-দুঃখে পাশে না থাকলে আপনারা কি ভালো থাকবেন? আমি সংবাদ সম্মেলনে রানাদাশ গুপ্তের বিরুদ্ধে একটিও ভুল অভিযোগ তুললে তিনি তো আমার বিরুদ্ধে সাংবিধানিক ব্যবস্থা নিতে পারতেন।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে বড় লোকরা নিরাপদে থাকবেন। কারন সরকার উনাদের রক্ষার প্রটোকল দিয়েছেন, আমাদের আপনাদের কি প্রটোকল আছে? সব বুঝে শুনে চোখ কান খোলা রাখুন, বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা দান করুন।

কাবেরী সরওয়ার।
সাংগঠনিক সম্পাদক,
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর