আব্দুল কুদ্দুস এমপির আজ শুভ জন্মদিন

বৃহত্তম উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রবীণ ও কিংবদন্তী রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসন থেকে বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস এমপির আজ ৭৫তম শুভ জন্মদিন।

তিনি তার মেধা দক্ষতা যোগ্যতা ও সেবাপরায়ণ মানসিকতার দ্বারা আজীবন জনগণের সেবা করে যাবেন এমনটাই প্রত্যাশা। নিচে তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের কিছু চিত্র তুলে ধরা হলো।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস এমপি ৩১ অক্টোবর ১৯৪৬ সালে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর ইউনিয়নের চলনবিল এর বিলসা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। পিতা মো:হায়েতুল্লাহ সরদার পেশায় ছিলেন কৃষক ও মাতা মোছা: গুলেনুর বেগম ছিলেন গৃহিণী। ৭/৮ বছর বয়সে তাঁর বাবা মারা যায়।

সেই ছোট বেলায় পিতৃহারা চলনবিলের মধ্যে একটি গ্রাম থেকে উঠে এসে রাজশাহী কলেজ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন এবং ইংরেজীতে এম এ পাশ করেছেন।

ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি প্রবীণ ও বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের। রাজশাহী কলেজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফার ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। ১৯৬৮-৭২ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৬৯ এর গনঅভূর্থানের সময় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সেই সময় রাজশাহীর ছাত্ররা রাজপথ প্রকম্পিত রাখত। সেই গণঅভ্যুত্থানের মুখে আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় শাসকচক্র। অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস রাজশাহী অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। তিনি কমান্ডার হিসেবে জীবন বাজি রেখে পাক হায়েনার বিরুদ্ধে প্রানপণে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধে তাঁর বড় ছেলে শহীদ কল্লোল পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক নিহত হয়। দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি (১৯৭২-৭৪) রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কে হত্যার পর তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী রাজশাহী জেলায় যে ব্যক্তিকে প্রথম গ্রেফতার করেন তিনি অাব্দুল কুদ্দুস ( ১৯৭৫ এর ১৭/১৮ আগষ্ট)। খুনিচক্র তাঁকে কারাগারে নিক্ষিপ্ত করে।

দীর্ঘ ৫ বছর কারাভোগ করেছেন তবু ঘাতকদের কাছে মাথানত করেন নাই। কারাগারে থাকা অবস্থায় রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮২-৮৬ পর্যন্ত রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। রাজশাহী মহানগর গঠিত হলে ১৯৮৬-১৯৯০ পর্যন্ত তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সামরিক শাসকের অবসানের পর ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য হন। তিনি মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।

তিনি নির্বাচনী এলাকা ৬১,নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর) আসনে সর্বমোট ৭বার দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী, বঙ্গবন্ধুর স্নেহাশিস সহযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ২লাখ ৮৬ হাজার ২৬২ ভোট পেয়ে টানা ৩য় বার ও সর্বমোট ৫ম (১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৩ ও ২০১৮) বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন। বর্তমানে তিনি নাটোর -৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাশপুর) আসনের সংসদ সদস্য এবং নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন।

তাঁর একমাত্র কন্যা অ্যাডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ও প্রাইম ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলএম ডিগ্রী অর্জন করেছেন। অ্যাডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য, বর্তমানে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সহ-সভাপতি ও জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড-২০১৭ বিজয়ী সংগঠন “কল্লোল ফাউন্ডেশন” এর প্রতিষ্ঠাতা। একমাত্র ছেলে আসিফ আব্দুল্লাহ বীন কুদ্দুস শোভন সে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেছেন এবং কল্লোল ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা দ্বাতা সদস্য।

সাংসদ আব্দুল কুদ্দুস গত (১৬ জানুয়ারি ২০১৮) তারিখে রাজধানীর আগারগাঁও আইসিটি টাওয়ার মিলনায়তনে আমারএমপিডটকম-এর সভাপতি ও আইটি বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার সুশান্ত দাসগুপ্তের সভাপতিত্বে ও শম্পা রেজার সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যকার সংযোগ স্থাপনকারী সামাজিক সংগঠন ‘আমারএমপি ডটকম’র তালিকা অনুযায়ী জনগণের কাছে স্বচ্ছত্বা ও জবাবদিহিতায় ১৫৬ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ৭ম নির্বাচিত হওয়ায় সেরা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী জেলা, মহানগর ও বিভাগের ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

কেএস/বার্তাবাজার

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর