এডরুক কোম্পানির ঔষুধে মৃত্যুর দুয়ারে শিশু, নিষ্ক্রিয় ভ্রাম্যমান আদালত
নিম্ন মানের ঔষুধের হাট বসিয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফের আধিকাংশ ফার্মেসী। ঔষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা ফার্মেসী মালিক ও এক শ্রেণীর চিকৎসকদের অর্থের বিনিময়ে আতাত করে এসব ঔষুধ বিক্রির তথ্য রয়েছে।
সম্প্রতি এডরুক লিমিটেড নামক একটি নিম্নমানের কোম্পানীর ঔষুধ সেবনে মৃত্যু মুখে পতিত হয়েছে এক শিশু। ভ্রাম্যমান আদালতের তদারকির অভাবে এসব নিম্নমানের মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষুধ বিক্রির ফলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে বলে অভিমত স্থানীয় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও সচেতন মহলের।
টেকনাফের অধিকাংশ লোকের সচেতনতার অভাবকে কাজে লাগিয়ে এডরুক লিমিটেডের কিছু বিক্রয় প্রতিনিধি রোগীদের জীবন-মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে (3-C) সেফিক্সাইম গ্রুপের এন্টিবায়োটিক সিরাপসহ বেশ কিছু ঔষুধ বাজারজাত করে ঠগের হাট বসিয়ে পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে।
সম্প্রতি এই সিরাপটি সেবন করে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৯ বছরের এক শিশু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারনে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছে বলে দাবী করেছে শিশুটির পরিবার। অভিযোগের সূত্র ধরে সিরাপটি যাচাই করে দেখা গেছে, প্যাকেটের গায়ে ২০২২ ইং পর্যন্ত মেয়াদ লিখা থাকলেও কিন্তু বোতলের গায়ে মেয়াদ উত্তির্ণ তারিখের জায়গায় শুধু মাত্র ২০ লিখা। আবার ২০ লিখাটি মার্কার পেন দিয়ে ২২ লিখে দেয়া হয়েছে।
বার্তা বাজারের অনুসন্ধানে, টেকনাফে এরকম নিম্নমানের অন্তত দুই ডজনের বেশী কোম্পানীর অস্থিত্ব রয়েছে বাজারে। স্থানীয় সচেতন অনেকের কাছে সেগুলো ঔষুধের নামে ময়দা গুল্লা বলে পরিচিত।
এডরুক লিমিটেডের টেকনাফের ম্যানেজার শাহ আলম, ঔষুধটিতে সমস্যা রয়েছে সেটা স্বীকার করেছেন। সমস্যা জানার পরেও কিভাবে বাজারজাত অব্যাহত রেখেছেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার টিটু চন্দ্র শীল জানান, মেডিসিন মার্কেট তদারকির অভাবটা টেকনাফের চিকিৎসা খাতে এক বড় সমস্যা। ভালো মানের ঔষুধ প্রেসক্রাই করলে ফার্মেসীতে গেলে রোগীকে একই গ্রুপের নিম্ন মানের ঔষুধ ধরিয়ে দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পুরানো। এসব ঔষুধে রোগীর সুস্থতাতো দূরের কথা, উল্টো স্বাস্ব্য হুমকিতে পড়ে। এসব কারনে ডাক্তারদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, মেডিকেল সেক্টরে ভাম্যমান আদালতের অভিযানের দিকটা একটু পিছিয়ে রয়েছে স্বীকার করে ‘বার্তা বাজার’কে জানান, অতি শীঘ্রই ফার্মেসীগুলোতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে। জনস্বাস্থ্য নিয়ে তামাশা করলে প্রয়োজনে ফার্মেসীর লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হবে।
সচেতন মহলের দাবী, এসব বন্ধে ফার্মেসী ও গ্রাম্য ডাক্তারদের প্রতিষ্ঠানে প্রতি মাসে ভাম্যমান আদালত পরিচালনা করা জরুরী।
কেএস/বার্তাবাজার