ছাত্রলীগ-যুবলীগের ভয়ে এক মাস আত্মগোপনে ইউপি চেয়ারম্যান

ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হুমকি এবং সশস্ত্র মহড়ার কারণে এক মাস কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ সেলিম আত্মগোপনে আছেন। চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা ঝুলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। যার ফলে প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নের বাসিন্দারা।

ছাত্রলীগ-যুবলীগের অস্ত্রের মহড়ার ঘটনাটি জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান শাহ সেলিম।

চেয়ারম্যান শাহ সেলিম জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর মাইজখার ইউনিয়নকে দুই ভাগ করার জন্য ইউপি কার্যালয়ের সামনে এক সভা হয়। সেই সভায় তার বক্তব্যের সময় ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ খান সেন্টু চেয়ারম্যানের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। দফাদার ও গ্রামপুলিশ সদস্যরা চেয়ারম্যানকে একটি কক্ষে রেখে দরজা বন্ধ করে দেয়। এসময় দফাদারসহ ৪-৫ জনকে মেরে রক্তাক্ত এবং চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সেদিনের মত তিনি রক্ষা পেলেও ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা এখন নিয়মিত চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। এছাড়াও তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয় । যার ফলে তিনি প্রায় একমাস কার্যালয়ে যেতে পারছেন না।

মাইজখার ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি জাহিদ হাসান জয় অস্ত্র নিয়ে মহড়ার বিষয়টি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, সংঘর্ষের ঘটনা আমি জানি। অফিসে যায় না এ বিষয়টি এইমাত্র শুনলাম। বিষয়টি যেহেতু আমার নলেজে এসেছে, আমি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

কালেমশার গ্রামের মো. কামাল হোসেনের স্ত্রী শিরিনা আক্তার বলেন, আমি দুই দিন যাবত আমার মেয়ের জন্মনিবন্ধন করতে এসে ইউনিয়ন পরিষদ বন্ধ পাচ্ছি। অনেক বড় ইউনিয়ন দূর থেকে এসেছি কিন্তু কাজটি শেষ করতে পারিনি।

ওই ইউনিয়নের মেহার গ্রামের মো. মজিবুর রহমান প্রধান ইউনিয়ন বিভাজনের সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, প্রতিপক্ষের লোকজন চেয়ারম্যানকে হত্যা করার চেষ্টা করে। তিনি আরও বলেন- আমরা চাই চেয়ারম্যান অফিস করুক। অনেক বিদেশগামীই কাগজপত্রের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে এসে ফিরে যান। তারাও বিপদে আছেন।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. রৌশন আলী বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে প্রায়ই বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেয়। আমরা এলাকায় শান্তি চাই। তার দাবি- স্থানীয় সাংসদ চাইলেই বিষয়টি সমাধান করতে পারেন।

মাইজখার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বাবুল জানান, ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কিছু নেতা বদরপুর বাজারে সশস্ত্র মহড়া দেয়। আমার ওপরও তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। বাজারের ব্যবসায়ীরাও আতঙ্কে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান না থাকায় সাধারণ মানুষ হয়রানি হচ্ছেন।

বার্তা বাজার/ডি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর