আশুলিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করেই চলছে খাবারের হোটেল!

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় মারাত্বক ঝুঁকিপূর্ণভাবে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে বিভিন্ন খাবার হোটেল তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। আর অবৈধভাবে তিতাসের মূল সরবরাহ লাইন থেকে সংযোগ নিয়ে নিম্নমানের পাইপ ও ফিটিংস ব্যবহার করে এসব হোটেলগুলোতে গ্যাস সংযোগ প্রদান করায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ।

আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার টুইন টাওয়ার এলাকায় জনৈক খোকন নামের এক ব্যক্তি স্থানীয় ভুট্টো নামের এক ব্যক্তির থেকে আবাসিক ভবনের নিচতলা ভাড়া নিয়ে একটি খাবারের হোটেল চালিয়ে আসছেন। সরেজমিন এই হোটেলে গিয়ে দেখা গেছে বিল্ডিং এর মেঝের নিচ থেকে নিম্নমানের চিকন স্টিল এবং একদম সরু প্লাস্টিকের পাইপ ব্যবহার করে পাঁচ মুখওয়ালা চারটি বিশাল চুলা ব্যবহৃত হচ্ছে রান্নার কাজে এবং একটি তন্দুল রুটির চুল্লীও দেখা গেছে যেখানে চিকন প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।

এব্যাপারে হোটেল মালিক খোকন ভিডিও বক্তব্যে এই প্রতিবেদককে জানান, দশ হাজার টাকার বিনিময়ে স্থানীয় মিজান নামের এক ব্যক্তি তিতাসের মূল সরবরাহ লাইন থেকে তার হোটেলে এই অবৈধ গ্যাস সংযোগটি দিয়েছে। সেই থেকে এভাবেই অবৈধ সংযোগটি চালাচ্ছেন তিনি।

ঝুঁকিপূর্ণ নিম্নমানের পাইপের দ্বারা এই সংযোগ ব্যবহার করায় সৃষ্ট যেকোনো দূর্ঘটনার দায় তিনি কিভাবে এড়াবেন এব্যাপারে মুঠোফোনে ভবন মালিক ভুট্টোর কাছে জানতে চাওয়া হলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। তবে তিনি জানান, হোটেল মালিককে যখন ভাড়া দেয়া হয়েছিলো তখন অবৈধ গ্যাস সংযোগ ছিলো না। আর আমার জানামতে হোটেলে সিলিন্ডার দিয়ে গ্যাস ব্যবহার করার কথা।

তবে এটা আশ্চর্যের বিষয়, বাড়িওয়ালা জানেন না যে তার ভাড়াটিয়া হোটেলের মালিক সিলিন্ডার দিয়ে নাকি অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে রান্নার কাজ চালান! অথচ এই প্রতিবেদকের ধারণকৃত ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে সিলিন্ডার ছাড়াই নিন্মমানের পাইপ ব্যবহার করেই গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।

তবে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এর সাভার জোনাল বিপনন অফিস এর ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোঃ সায়েমকে মুঠোফোনে জানালে তিনি বলেন, আগামী দু’একদিনের ভিতরেই ওখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ নিম্নমানের পাইপের দ্বারা এই সংযোগ ব্যবহার করায় এই দুইএক দিনের ভিতরে সৃষ্ট যেকোনো দূর্ঘটনার দায় তিনি কিভাবে এড়াবেন এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেন নাই।

আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানালে তিনি খুব দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে সাভার এবং আশুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় নিম্নমানের পাইপ ও ফিটিংস ব্যবহার করে অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করাকালীন সেখানে বিস্ফোরণের কারণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। পরে মাননীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী সাভার আশুলিয়ার কোথাও অবৈধ গ্যাস সংযোগ থাকবে না জানিয়ে এসব উচ্ছেদের জন্য তিতাসের সাভার জোনাল বিপনন অফিসকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।

কেএস/বার্তাবাজার

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর