স্ত্রী ধর্ষণের শিকার, সম্পর্ক ছিন্ন করলেন স্বামী

ঝালকাঠির স্ত্রী ধর্ষণেরে শিকার হয়ায় গৃহবধূর স্বামী তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন। নলছিটি উপজেলায় এক গৃহবধূকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগে শহিদুল হাসান হিরণ (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে হিরণকে আসামি করে নলছিটি থানায় মামলা করেন ওই গৃহবধূ।

এদিকে, ওই গৃহবধূসহ ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবককে পাশাপাশি বসিয়ে স্থানীয় কয়েকজন অশ্লীল ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর ওই গৃহবধূর স্বামী তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও ওই গৃহবধূর পরিবার জানায়, গত শনিবার রাতে ওই গৃহবধূর বাড়ির পেছনের গাছ বেয়ে ছাদ থেকে ঘরে প্রবেশ করেন হিরণ। এরপর কক্ষে ঢুকে ধর্ষণকালে ওই গৃহবধূর চিৎকার শুনে পরিবার ও আশপাশের লোকজন এসে হিরণকে আটক করে বেঁধে রেখে মারধর করে। এ সময় ওই গৃহবধূকেও মারধর করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকি অভিযুক্ত যুবক ও গৃহবধূকে পাশাপাশি বসিয়ে ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় স্থানীয়রা। পুলিশ ওই যুবককে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার পর পরই গৃহবধূকে অপবাদ দিয়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে, গৃহবধূকে নিপীড়নকারী মো. বাবুল বলেন, ‘উভয়েই অপরাধ করেছেন তাই মারধর করা হয়েছে। মারধর করব না তো ছেড়ে দেব?’

ঢাকায় চাকরি করা ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছি। আমাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপাতত আমার স্ত্রীকে রাখা সম্ভব নয়। পরবর্তী সময়ে কী করা হবে, তা এখন বলা যাচ্ছে না।’

ওই গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। ধর্ষণের ঘটনা শুনে তিনি আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর পরিবারের লোকজন আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমি নির্যাতিত হলাম, আবার তাদের মারও খেলাম। এখন আমাকে রাখবেও না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই গৃহবধূর দুটি সন্তান রয়েছে। রাতে হিরণ নামের ওই যুবককে আটক করার পর গৃহবধূকেও মারধর করা হয়। তাঁদের দুজনকে একসঙ্গে বসিয়ে গলায় হাত দিয়ে ভিডিও ও ছবি তোলা হয়। এগুলো যারা ফেসবুকে ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম তালুকদার বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ। আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। ওই গৃহবধূকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে শুনেছি। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বার্তাবাজার/এমআর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর