জেলেদের চাল নিয়ে চলছে হরিলুট

আহম্মেদ পাশা তানভীর, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ প্রনোদনার জেলেদের চাল নিয়ে মৎস্যবন্দর মহিপুরে সীমাহীন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে ৪ মাসের চাল বিতরণ করা হয়।

চাল বিতরণ কালে শুভংকরের ফাঁকিতে ১২০ কেজির পরিবর্তে ১০৫ কেজি চাল জেলেদের দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকৃত জেলেরা চাল না পেয়ে ফুসে উঠতে শুরু করেছে, যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে অনাকাংখিত দুর্ঘটনা। জনপ্রতিনিধিদের নজির বিহীন হরিলুটের গ্যারাকলে পরেছে আমজনতা। জেলেদের চালের তালিকায় রয়েছে মৃত্যু ব্যক্তি, প্রবাসে থাকা ব্যক্তি, হোন্ডাচালক, ভ্যান চালক, দোকানদার, বিত্তশালী ব্যক্তিদের নাম।

যে সকল জেলেরা জীবনবাজী রেখে বঙ্গোপসাগরে রুপালী ইলিশ আহরন করে দেশের অর্থনীতি চাঙা রাখছে, তাদের নাম নেই জেলে তালিকায়। চালের স্লিপ পেলেও চাল পায়নি অনেকে। ভোটের রাজনীতির গ্যাড়াকলে স্ব স্ব ইউপি সদস্যদের পছন্দের ভোটারেরা ছাড়া বিরোধীরা পাচ্ছেনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ প্রনোদনার জেলে চাল। মাপে কম দেওয়ার রেওয়াজ তো আছেই। বি ত উত্তপ্ত জেলেদের ভয়ে মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ, থানা পুলিশ দিয়ে ১০৫ কেজি চাল বিতরন অব্যাহত রেখেছে।

১১৪ পটুয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ অধ্যক্ষ মুহিব্বুর রহমান মুহিব এ চাল বিতরনের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করে দিলেও বোধদয় ঘটেনি মহিপুরের জনপ্রতিনিধিদের। ডাবল নামে চাল বিতরনরেও সত্যতা পাওয়া গেছে। ইউনয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. মোসলেম বিশ্বাসের নাম জেলে তালিকায় দুইবার রয়েছে। ৯৫৮ জন কার্ডধারী অনুমোদিত জেলেদের মধ্যে ৬৯৬ জন তালিকাভূক্ত জেলে চাল পেয়েছে।

এদিকে মহিপুর ইউনিয়নের জেলেদের চাল বিতরণ তালিকার ৮৮ নং ক্রমিকে লাল মিয়ার পুত্র মৃত্যুঃ বাবুল হাং, ১২৩ নং ক্রমিকের রমজান আলি হাওলাদারের পুত্র মৃত্যুঃ আবুল কাশেম হাং, ১৪৮ নং ক্রমিকে মালেক মোল্লার পুত্র মৃত্যু মাহবুব মোল্লার নামে চাল উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও ছত্তার খাঁনের পুত্র মালয়েশিয়া প্রবাসী ইউসুফ খাঁন, ফয়জর আলীর পুত্র হুন্ডা চালক আব্দুল সালাম, হোসেন আলী জমাদ্দারের পুত্র রবিউল জমাদ্দারও প্রবাসী হয়ে জেলেদের নামের চাল উত্তোলন করেন। অথচ প্রকৃত জেলেদের চালের তালিকায় নাম নেই।

সাগরে যারা জীবন বাজি রেখে মাছ ধরে তাদের সকলের একটাই দাবী পুরাতন তালিকা বাতিল করে নতুন তালিকা তৈরী করা হোক। ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নজিবপুর গ্রামের জেলে আব্দুল হাই হাওলাদার জানান, আমি চার মাসের চাল বাবদ ১২০ কেজি পাওয়া কথা থাকলেও প্রকৃত চাল পেয়েছি ১০৫ কেজি।

মহিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল সালাম আকন বলেন, এ তালিকায় আমার কোন হাত নেই। ২০১৪ সালে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকরা এ তালিকা তৈরী করেন। একটি পক্ষ পুরাতন তালিকা বাদ দিয়ে নতুন তালিকা তৈরী করতে বললে আমি কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে, তিনি আমাকে চলমান তালিকা অনুসারে চাল বিতরণের নির্দেশ দেন।

এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুপ দাশ বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর