কমলনগরে চেয়ারম্যান রাজু’কে নিয়ে ষড়যন্ত্র, প্রতিবাদ সভা

শাকের মোহাম্মদ রাসেল, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: বেসরকারী চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনে ক্রাইম সিনে চেয়ারম্যান নুরুল আমিন রাজুকে নিয়ে অসত্য সংবদ পরিবেশনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন প্রতিবাত সভা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে কমলনগরের পাটওয়ারী হাট ইউনিয়েনের খায়ের হাট এলাকায় এ প্রতিবাদ সভা ও সংবাদ সম্মেলণ করে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যবৃন্দ, থানা আওয়ামীলীগ, ইউনিয়ন আ’লীগ, ইউনিয়ন যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। বক্তারা বলেন, যারা ক’দিন পর পর সাংবাদিকদের মিথ্যা বিভ্রান্তি মূলক তথ্য দিয়ে চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল আমিন রাজুর বিরুদ্ধাচারণ করার ষড়যন্ত্র করছেন, তারা এ ইউনিয়নের জনগণের শক্র, তারা আওয়ামীলীগের ঘোর বিরোধিতাকারি তাদের জন্য পাটারিরহাট ইউপির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, আমরা তাদেরকে আর ছাড় দিবনা, তাদেরকে প্রতিহত করব। বক্তারা সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম রাশেদ বিল্লাহ আলমগীরকে ইঙ্গিত করে বলেন, আপনার বাবা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারি, আপনারা রাজাকারের সন্তান, রাজাকারের ঠাই এ বাংলার মাটিতে হয়নি আপনাদেরও ঠাঁই হবেনা। আপনি ১৩বছর চেয়ারম্যান থাকাকালে যা করতে পারেননি, তিন বছরে বর্তমান চেয়ারম্যান কয়েকগুন উন্নয়ন করেছে। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে তার বিরুদ্ধে যত ষড়যন্ত্র করবেন, মিথ্যাচার করবেন কোনটি কাজে আসবেনা। এ ইউপির জনগণ সব প্রতিহত করবে। প্রতিবাদ সভায় বক্তারা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য যমুনা টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান। সভা শেষে মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে প্রায় সহস্রাধিক লোক মিলিত হয়ে খায়েরহাট বাজার সড়কে প্রতিবাদ মিছিল করেন। মিছিল শেষে এ কে এম নূরুল আমিন রাজু সংবাদ সম্মেলনে মিলিত হন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, যমুনা টেলিভিশন ক্রাইম সিন আমার বিরুদ্ধে যে সংবাদ প্রচার করছে এর আগে একই নিউজ ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের তালাশ আমার বিরুদ্ধে প্রচার করেছে। আমার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী এ কে এম রাশেদ বিল্লাহ আলমগীর সাংবাদিকদের এসব মিথ্যা তথ্য দিয়ে যাচ্ছে। যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিকরা রাশেদ বিল্লাহ আলমগীরের দেওয়া তালিকা হাতে নিয়ে ওসব ব্যাক্তিদের খুঁজে শুধুমাত্র তাদের বক্তব্যই কোড করে নেয়। তিনি বলেন, যমুনা টিভি একটি জনপ্রিয় চ্যানেল, তাই কারো পক্ষ নিয়ে একচটিয়া সংবাদ পরিবেশন করা এটা কাম্য নয়। যমুনা টিভি’র ক্রাইম সিনে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে এর আগে হুবহু অভিযোগ চারটি দপ্তরে প্রেরণ করেন রাশেদ বিল্লাহ আলমগীর। তদন্ত শেষে কর্তৃপক্ষ অভিযোগগুলোর সত্যতা প্রমান পায়নি। ক্রাইম সিনে আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এনেছে, লেচকি রাস্তা: এ রাস্তাটি প্রায় ৬কি:মি: দৈর্ঘ্য। বরাদ্ধ অনুসারে পার্টে পার্টে এ রাস্তার কাজ করা হত। জনস্বার্থে পুরো রাস্তাটি কয়েক খন্ড ভিন্ন নাম দিয়ে প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে হয়। খায়ের হাট বাজারে আসা পাকা রাস্তা: রাস্তাটি হল এলজিইডির। তবে আমি বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়ঝাপ করে ৭০লক্ষ টাকা বরাদ্ধে রাস্তাটি টেন্ডার করাই। ইতোমধ্যে রাস্তার নির্মানে কাজ শুরু করে ঠিকাদার। কালর্ভাটে প্লাষ্টিকের পাইপ: প্লাষ্টিক পাইপযুক্ত কালর্ভাটগুলো সাবেক চেয়ারম্যানের সময়কালে হয়েছে যাতে নামপলক দেওয়া আছে।

সরকারি ঘর নির্মানে টাকার উৎস্য: ঘর দেয়ার কার্যক্রমে চেয়ারম্যানের কোন সম্পৃক্ততা নেই। চাউল বিতরণে টোকেন বাণিজ্য: জেলেদের জাতিয় পরিচয়পত্রে ও চাউলের আইডি কার্ডে প্রায় বার ডিজিটের সংখ্যা। চাল বন্টনে সময় সংক্ষিপ্ততার স্বার্থে জেলে লিষ্টের ক্রমিক নম্বর দিয়ে টোকেন দেয়া হয়। ওই ক্রমিক অনুযায়ী জাতিয় পরিচয়পত্রে ও চাউলের আইডি কার্ড পরীক্ষন করে প্রকৃত জেলেকে চাল দেয়া হচ্ছে। কোন জেলে চাল নিয়ে অন্য কারো নিকট বিক্রি করলে তার দায়ভার চেয়ারম্যান নিবেনা। তাছাড়া পরিষদের উদ্যোগে প্রত্যেকটি গ্রামে মহল্লায় মাইকিং করে চালের কার্ড কিংবা চাল ক্রয়-বিক্রয় না করতে সচেতন করা হয়েছে। এ ইউনিয়নে ৪হাজার জেলে রয়েছে, নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা ১৪শ’ ৬২জন। প্রতিপক্ষ লোকজনের সহযোগিতায় অনিবন্ধিত জেলেরা আমার বিরুদ্ধে এসব বায়ুবীয় অভিযোগ চড়ায়। সরকারি খাল দখল সংক্রান্ত: পাটারিহাট ইউনিয়ন পূর্ব চরফলকন মৌজার খায়েরহাট বাজার ৪০৮২ দাগে ১২একর ৭৬শতাংশ ভূমি খাস রয়েছে। বর্তমান তহসিলদার আবদুস সাত্তার অনৈতিক সুবিধা নিয়ে জনৈক মফিজুল ইসলাম ও নিরু বেগম কে একই দাগে ১একর ভূমি ৭৩/১২-১৩ মূলে সরকারি খাল বিধান না থাকলেও বন্দোবস্ত দেয়। একই দাগে ৫০টির মত দোকান ভিটি রয়েছে। ভিটি বন্দোবস্তে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিচ্ছে। রয়েছে প্রায় ৬ একরের ৩টি দীঘি। ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে লীজ ছাড়া দীঘিগুলো তিনি জনৈক ব্যাক্তিকে মাছ চাষের সুযোগ করে দেয়। এসব অনিয়মকে তিনি নিয়মে পরিণত করেছেন।

আমার স্ত্রী আদালত যোগে একই দাগে ৬৪শতাংশ সম্পত্তি রায় ডিক্রি প্রাপ্ত হয় ওই জমি নামজারি করতে গেলে তিনি আমার নিকট ৫০হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় তিনি যোগদানে এক সাপ্তাহের মধ্যে আমার উক্ত ভূমির ওপর স্থাপনা উচ্ছেদের আবেদন সহ আমার বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ করেন। তার অনিয়ম দুর্নীতির আড়ালে রয়েছে অনৈতিক কর্মকান্ড। ২০১২ সালে এ ইউনিয়নে কর্মরত থাকাকালে তার কাজের মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে তাকে অন্ত:স্বত্বা করে। এর আগে তিনি নারী নির্যাতন মামলায় জেল খাটেন।

সরকারি ভূমি নিয়ে তার অনিয়মের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুদক সহ কয়েকটি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করছি কারণে তহসিলদার আমার বিরুদ্ধাচরণ করছে বলে চেয়ারম্যান রাজু জানান। পরিশেষে নুরুল আমিন রাজু বলেন, যমুনা টিভি’র ক্রাইম সিনে গত বুধবার রাতে আমাকে জড়িয়ে যে সংবাদ প্রচার করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন। আমার প্রতিদ্বন্ধিপক্ষ সাংবাদিককে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করেছে এবং অত্র ইউনিয়নের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছে। আমি উক্ত সংবাদের তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর