‘কেমফিউশন’ রসায়ন গবেষণায় এক নতুন সম্ভাবনার নাম

গবেষণার বিষয় বস্তুু যদি সহজ সরল ভাবে উপস্থাপন করা যেত তাহলে কেমন হতো। গবেষণার ভাষা যদি বাংলা হতো তাহলে কেমন হতো। এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ‘কেমফিউশন’ এর সৃষ্টি।

বর্তমান যুগ বিজ্ঞান গবেষণার যুগ আর এই বিজ্ঞানের মৌলিক শাখাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো রসায়ন৷ বিশ্বজগত সৃষ্টির শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মানুষ এবং তার পারিপার্শ্বিক সকল কিছুর কারণ এবং ব্যাখ্যার সাথে রসায়ন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।তবে দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশে রসায়ন চর্চা এখনো যথাযথ প্রসার লাভে ব্যর্থ। এই পিছিয়ে পড়ার গল্প থেকেই তারুণ্যের হাত ধরে নতুন গল্পের শুরু। এক ঝাঁক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণের হাত ধরে জন্ম নেয় রসায়নভিত্তিক ছোট্ট এক সংগঠন ‘কেমফিউশন’।

কেমফিউশনের মূল লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয় এ রসায়ন পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করে তোলা। একজন আদর্শ রসায়নবিদ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করা। এছাড়াও স্কুল কলেজ এ রসায়নের প্রায়োগিক দিক সমূহ তুলে ধরা। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে রসায়নের সৌন্দর্য তুলে ধরা।

ইতোমধ্যে দেশের বিজ্ঞান,‌ রসায়ন, রাসায়নিক প্রকৌশল এর বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সংগঠনটি। ক্ষুদ্র পথচলায় এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছে দেশের প্রথম রসায়নভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট www.chemfusion.net রসায়নের নানাবিধ বিষয়কে বাংলায় সহজ-সাবলীলভাবে তুলে ধরতে, রসায়নের নতুন গবেষণা সম্পর্কে ধারণা দিতে, সেই সাথে রসায়নকে আকর্ষণীয় করতে অনবদ্য ভূমিকা রাখবে এই ওয়েবসাইট।

বর্তমানে এই সংগঠনের বিভিন্ন টিমে ১০০ এর অধিক তরুণ কাজ করে যাচ্ছে। রসায়নপ্রেমীদের এক ছাতার তলে নিয়ে আসার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে এই সজীব প্রাণোচ্ছল তরুণেরা।

অল্প সময়ের মধ্যে দেশের বিজ্ঞান,রসায়ন,রাসায়নিক প্রকৌশল এর বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সংগঠনটি। ক্ষুদ্র পথচলায় এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেশের প্রথম রসায়নভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট।এছাড়া কেমিফিউশন এর রয়েছে সমৃদ্ধ ব্লগ যেখানে রসায়ন ও নানা সৃজনশীল বিষয়ে প্রতিনিয়ত লেখালেখি করে শিক্ষার্থীরা। ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার এও রয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাবলীল বিচরণ।

‘কেমফিউশন ‘ এর আরেকটি অর্জন হলো ম্যাগাজিন প্রকাশ। সেপ্টেম্বর এ প্রকাশিত হয়েছে এই প্রথম ম্যাগাজিন ‘হাইড্রোজেন’ যা ইতোমধ্যে ৫৫০০ অধিক কপি ডাউনলোড হয়েছে।এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশের একটি অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হিসেবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ হাসান জানান,”দেশে বিজ্ঞান বিশেষত রসায়নকে জনপ্রিয় করণই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। সেই সাথে গবেষণায় সকলকে উদ্বুদ্ধ করা আমাদের লক্ষ্য।পাশাপাশি রসায়ন, ফলিত রসায়ন, রাসায়নিক প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা যেন হতাশায় না ভোগে সেজন্য বিষয়ভিত্তিক সম্ভাবনার পরিধিকে তুলে ধরার চেষ্টা করছি আমরা। কেমফিউশন এর অনেক সদস্য বর্তমানে গবেষণায় যুক্ত আছেন। অনেকের বিভিন্ন প্রকাশনা আন্তর্জাতিক জার্নালে জায়গা করে নিয়েছে।”

প্রতিষ্ঠানটির কো- অরডিনেটর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সাঈদ নেওয়াজ চৌধুরী নিশান তিনি জানান,”কেমফিউশন বিশ্বাস করে দূষণমুক্ত দেশ গঠনে রসায়ন সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এছাড়াও রাসায়নিক বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে শিল্প বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। ”

তিনি আরও বলেন “কেমফিউশন একটি সম্ভাবনার গল্প, এগিয়ে যাওয়ার গল্প। কেমফিউশন গুটিকয়েক মানুষ নয়, এটি বিজ্ঞানভিত্তিক, গবেষণামুখী, উন্নত এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন।”

কেএস/বার্তাবাজার

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর